অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সবাইকে মাঠে নামার আহ্বান জানিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।

তিনি বলেন, সরকার মাফিয়া হয়ে গেছে। মানুষের ওপর নানা অন্যায়, অবিচার, গুম, খুন ও অত্যাচার করছে। তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। তাদের প্রতিহত করতে হবে। যার যার অধিকার আদায়ে কাজ করতে হবে। অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সবাইকে মাঠে নামতে হবে।

রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদ আয়োজিত এক মানববন্ধনে নুর এসব কথা বলেন।

সাবেক ডাকসু ভিপি বলেন, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে দেশ থেকে বিদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। দেশের আপামর জনসাধারণের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। হ্যামিলিনের বাঁশিওয়ালার বাঁশি শুনলেই রাস্তায় নেমে যেতে হবে।

নুর বলেন, ছুটি কাটাতে এসে রাস্তায় দাঁড়াতে হয় এমন একটি দেশের নাগরিক আমাদের প্রবাসীরা। একটা টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকে না। বিমানের টিকিট পর্যন্ত পাচ্ছেন না প্রবাসীরা। এ জন্য তারা এখানে দাঁড়িয়েছেন। অথচ এই দায়িত্ব ছিল সরকারের। কেন তাদের এখানে দাঁড়াতে হবে?

‘দুর্নীতি, লুটপাট করে বিপদে পড়ে সরকার এখন জনগণের পকেট কেটে টাকা আদায় করছে। টিকিট পাচ্ছে না। এ জন্য সারা দেশ থেকে তারা এখানে এসেছেন।’

তিনি বলেন, আমাদের প্রবাসী শ্রমিক ভাইয়েরা করোনার সময় কীভাবে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন আমরা সবাই জানি। তাদের গোসল, খাওয়ার ব্যবস্থা নেই। টিকার অভাবে অনেকের টিকিট বাতিল হয়ে গেছে। একটা টিকিটের প্রক্রিয়া সরকার ঠিকমতো করতে পারেনি।

এ সময় প্রবাসীদের অধিকার বিষয়ে নানা প্রশ্ন তুলে ভিপি নুর বলেন, বিদেশে মারা গেলে লাশ আনতে হবে এ দাবি কেন জানাতে হবে সরকারকে? প্রবাসীর সাহায্য করতে বারবার প্রেসক্লাবে এসে দাঁড়াতে হবে কেন? এগুলো তো সরকারের দায়িত্ব। দেশে ছুটি কাটাতে এসে তাদের দাবিদাওয়া জানাতে হচ্ছে।

২০০৮ সাল থেকে একটা ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের নামে ক্ষমতায় এসেই সরকার পরিকল্পিতভাবে চৌকস সেনা অফিসারদের হত্যা করেছে। ছাত্রলীগ, যুবলীগের লোকজন সিলেট, কক্সবাজারে ধর্ষণ ও হত্যা করছে। ৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত কথা শুনেছি অভিজ্ঞদের কাছে। এখন সেটি দেখতে পাচ্ছি।

মানববন্ধনে বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি মো. কবীর হোসেন জানান, সরকারি হিসাব অনুযায়ী এখন পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ বাংলাদেশি নাগরিক বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আছেন, যা বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১১ শতাংশ। কিন্তু প্রবাসীরা বরাবরই বঞ্চিত।

এ সময় তিনি প্রবাসীর জন্য বেশ কিছু দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন।

দাবিগুলো হলো— প্রবাসে মারা যাওয়া বাংলাদেশি নাগরিকদের মৃতদেহ রাষ্ট্রীয় খরচে দেশে আনা, প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, বিমানবন্দরে প্রবাসী হয়রানি বন্ধ করা, প্রবাসীদের জন্য যুগোপযোগী দ্বৈত নাগরিকত্ব আইন ও পেনশন সুবিধা প্রদান, পাসপোর্ট সংশোধনের সুযোগসহ দালালমুক্ত পাসপোর্ট ও দূতাবাস নিশ্চিত করা, জাতীয় বাজেটে প্রবাসীদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখা, বিদেশে কাগজপত্রবিহীন প্রবাসীদের বৈধকরণে সরকারি সহায়তা, বিদেশে প্রবাসীদের জন্য পর্যাপ্ত বাংলাদেশি দূতাবাস ও শ্রমকল্যাণ উইং গঠন ও অভিবাসন ব্যয় এক লাখ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ ও প্রবাস ফেরতদের কর্মসংস্থান, সুদমুক্ত পর্যাপ্ত ঋণ সুবিধা দেওয়া।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading