
অতীতের ভুল স্বীকার মানেই নিজেকে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়া আরো পরিপক্কতা ও সঠিকভাবে। আমাদের দেশের কোন রাজনৈতিক দলই বিশেষতঃ যারা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের প্রশাসনিক ও রাজনৈতিকসহ নানাবিধ ভুল বা এুটি- বিচ্যুতি থাকাটাই স্বাভাবিক এবং এটাকে জাতীয়ভাবে স্বীকার করে নেয়ার মধ্যে নিজ নিজ দলকে জনগনের নিকট আরো গ্রহনযোগ্য ও আবেদনময়ী করে তোলারও এক কৌশল বলে বিবেচিত ও পরিগনিত হতে পারে।
অথচ বাংলাদেশ চিত্রটা একেবারেই বিপরীত। বিনা কারনে, জনগনের তিক্ততা অর্জনে বিভিন্ন বক্তব্যে, বিবৃতিতে, দলীয় মেনিফেস্টো রচনায়, এমনকি দেশে- বিদেশের প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসমুহে একতরফা বিপরীতমুখী ধারাগুলো বেশ সরব ও গতিশীল। টকশোগুলো আজ তার ঐতিহ্য ও গৌরব হারিয়ে নিছক দলীয় বলয়ভিত্তিক আক্রমনাত্বক ফোরামে পরিনত হয়েছে। সমালোচনার অপমৃত্যু ঘটিয়ে একপেশে বলয়নির্ভর নিন্দার ঘাটি হিসেবে আরো বেশী বেশী পোক্ত হচ্ছে। টকশো এক সময় দেশ।জাতি ও ক্ষমতাসীনদের রসদ হিসেবে কার্যকরী ভুমিকা রেখেছিলো। হায়রে হায়!! এখন এটাকে বলা হচ্ছে ” টকশো টক হয়ে গেছে”।
টকশোকে গুরত্বহীন মনে করে স্বয়ং প্রধানমনত্রী সংসদে বলেছেন যে টকশো শুনে তিনি দেশ পরিচালনা করেন না অর্থাৎ টকশোর ইতিবাচক আবেদন আর নেই।তিনি যা ভাল মনে করেন তাই করেন। পরিনামে জনগন ও জাতি সত্য জানা, বুঝা ও উপলব্ধি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মারাত্মকভাবে। সময় এসেছে উপলব্ধি, পরিবর্তন এবং যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলার, এগিয়ে থাকার। বাংলাদেশ আজ এশিয়ার বিকাশমান অর্থনৈতিক বাঘ এবং মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে দ্রতগতিতে। জ্ঞান,বিজ্ঞান, কারিগরি, প্রকৌশলী বহুমুখী বলয়ে আমাদের বিকশিত হতে হবে টেকসইভাবে। বিশাল সমুদ্র সম্পদের ভান্ডারকে কাজে লাগাতে হবে, জলবায়ু থাবাকে মোকাবেলা করতে হবে।এজন্য সবার আগে প্রয়োজন ইতিবাচক রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও দুরদর্শী নেতৃত্ব, যোগোত্তীর্ন পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা নীতি য়া জাতীয় শক্তি(National Power) বৃদ্ধি ও সুসংহতকরনের মুল হাতিয়ার। বর্তমানই সব নয়, ভবিষ্যৎ খুবই চ্যালেন্জিং ও সমস্যা সংকুল। প্রশ্ন হলোঃ রাজনৈতিক দলগুলো কি এ বাস্তবতা ও সত্যতা মেনে নেবে?
ডক্টর সিনহা এম এ সাঈদ
১৮ নভেম্বর ২০২১