সেপ্টেম্বর ২২, ২০২১

জনাব আন্তোনিও গুতেরেস,

সন্মানীয় মহাসচিব,

জাতিসংঘ, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র

 

সন্মানীয় জাতিসংঘ মহাসচিব,

জিডিপির উচ্চতর প্রবৃদ্ধি ও দারিদ্র্য হ্রাসে এসডিজির লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পুরস্কৃত করায় আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। এইগুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে হঠাৎ অলৌকিকভাবে অর্জন হয়নি।

গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানিক উন্নয়ণ (DID) মডেলের পুনর্গঠণ কর্মসূচীর আংশিক ১৯৮২ থেকে এরশাদ, খালেদা ও হাসিনা সরকার বাস্তবায়ন করায় এগুলো অর্জন হয়েছে। তাই সরকার বদল হলেও পূর্ণগঠনের ধারা একই রয়েছে।

সংযুক্ত “বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি, দারিদ্র্যতা, দুর্নীতি, প্রশাসন ও গণতন্ত্রের চিত্রসমূহ:—অন্তর্নিহিত কারণ, তত্ত্ব ও উদ্যোগগুলো” নিবন্ধে সেগুলি স্পষ্ট করা রয়েছে। ২০১৫ পর্যন্ত জিডিপির উচ্চতর প্রবৃদ্ধিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান নেই বললেই চলে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান ২০১৫-এর পরে। এখনও খালেদার (৩.০%) চেয়ে ১.০% কম। রাষ্ট্রপতি এরশাদের সংস্কার অবদান বৈপ্লবিক এবং ভিত্তিমুলক। যদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অঙ্গীকারকৃত বাকি কুমিল্লা ও ফরিদপুর বিভাগ বাস্তবায়ন করেন, তাহলে তাঁর অবদান বেড়ে ৩.৩% এবং প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চেয়ে বেশি হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি জাতীয় আয় বন্টন (NID) বা মুজি আমলের ১ম জাতীয় বেতন স্কেল (NPS)-এর সর্বোচ্চ-সর্বনিম্ন অনুপাতের সামঞ্জসে ৯ম NPS চালু করেন, তাহলে সেবছরেই জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২.৫% বেড়ে যাবে।

বিষয় দুটো জেনেও তিনি ১৯৯৭ থেকে জনগণকে ৩.৮% বাড়তি প্রবৃদ্ধির হার থেকে বঞ্চিত রেখেছেন। রাজনৈতিক দুর্নীতির জন্যে এখন অর্ধেক থেকে এক-চতুর্থাংশ বেতন দিয়ে সরকারী সংস্থাগুলো চালানো হচ্ছে।

৯ম সংসদ নির্বাচনে(২০০৮) শেখ হাসিনার ১নং অঙ্গীকার ছিলঃ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গণতান্ত্রিক সংস্কার আনা এবং গণতন্ত্রের জন্য কার্যকর সংসদ প্রতিষ্ঠা করা। ৯ম সংসদে ৭৫% আসন দিয়ে তাঁর অঙ্গীকার জনগণ অনুমোদন করে।

১৫শ সংশোধনীতে অঙ্গীকার রক্ষার বদলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অতীতের বিধান পুনঃচালু করেন। অথচ এর বিরুদ্ধে তিনি ১৭৬ দিন ধর্মঘট করেন। লেখকের উদ্যোগে অর্জিত উচ্চতর জিডিপি বৃদ্ধির গণপ্রেক্ষাাপট এবং জাতিসংঘের পুরষ্কার-প্রশংসার সনদে নিজ-স্বার্থে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার সহ প্রচলিত আধা-গণতন্ত্রও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধংশ করছেন।

এখন জাতিসংঘের দায়িত্ব হল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গীকারমত দুটি বিভাগ ও দ্বিকক্ষ-সংসদের বিধানসহ ডিসেম্বর, ২০২১/জানুয়ারী ২০২২-এ ২য় কক্ষের (জাপান-ফ্রান্সের মতো সিনেট) নির্বাচন করিয়ে কার্যকর সংসদ প্রতিষ্ঠা করা।

 

আন্তরিকতার সাথে,

মোহাম্মদ আহসানুল করিম,

রাষ্ট্রবিশেষজ্ঞ, এবং বাংলাদেশ সরকারের সাবেক উপ-সচিব,

সদস্য, AEA, AEHA BEA; হেরিটেজ ফাউন্ডেশন,

প্রতিষ্ঠাতা, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক-অর্থনীতি ইনস্টিটিউট (IDPE)

 

*পত্রের সাথে “বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি, দারিদ্র্যতা, দুর্নীতি, প্রশাসন ও গণতন্ত্রের চিত্রসমূহ: —অন্তর্নিহিত কারণ, তত্ত্ব ও উদ্যোগগুলো”, দুইকক্ষ সংসদ, ও মুজিবামলের ১ম জাতীয় বেতন স্কেলের (NPS)সামঞ্জসে অন্তর্বতীকালীণ ৯ম NPS-এর চালু বিষয়ে নিবন্ধ, এবং ২০১৫ সালের বিশ্বব্যাংকের চিঠি সংযুক্ত করা হয়েছে।

 

স্কেল নং নেতিবাচক চলমান

৮ম জাতীয় বেতন স্কেলসমূহ 

১৯৭৩-এর

১ম জাতীয় বেতন স্কেলসমূহ 

    ৯ম সুষম (আদর্শ)

জাতীয় বেতন স্কেলসমূহ: নমুনা 

  সর্বোচ্চ (১নং) ও সর্বনিন্ম (২০নং)

শুরুর  মূল-বেতন অনুপাত  ৯.৮:১

৫০ ব: বয়সে মূল-বেতন অনুপাত  ৩.৭:১

সর্বোচ্চ (১নং) ও সর্বনিন্ম (১০নং)

শুরুর  মূল-বেতন অনুপাত  ১৫.৪:১

৫০ ব: বয়সে মূল-বেতন অনুপাত  ৯.৭:১

সর্বোচ্চ (১নং) ও সর্বনিন্ম (২০নং)

শুরুর  মূল-বেতন অনুপাত  ১৫,৪:১

৫০ ব: বয়সে মূল-বেতন অনুপাত  ৯.৭:১

 
০১ ৭৮,০০০/- ০১       ২,০০০/- (১নং স্কেল) ২,০০,০০০/-(-৪৫০০x৪-২,১৮,০০০)
০২ ৬৬,০০০-২৪৮০-৭৬,৪৯০ ০২ ১,৭৫,০০০-৪৩০০৫-১,৯৬,৫০০
০৩ ৫৬,৫০০-২২৬০৭-৭৪,৪০০ ০৩       ১৪৭৫- (২নং স্কেল) ১,৫০,০০০-৪০০০x৬-১,৭৪,০০০
০৪ ৫০,০০০-২০০০৯-৭১,২০০ ০৪   ১২০,০০০-৩৬০০x৮-১,৪৮,৮০০
০৫ ৪৩,০০০-১৯৪০১১-৬৯৮৫০ ০৫        ১১৫০- (৩নং স্কেল) ১,০০,০০০ -৩৩০০১০-১,৩৩,০০০
০৬ ৩৫,৫০০-১৭৮০১৩-৬৭০১০ ০৬        ৮০০- (৪নং স্কেল) ৮০,০০০-২৯০০১৩-১১৭,৭০০
০৭ ২৯,০০০-১৪৫০১৬ -৬৩৪১০ ০৭ ৬৬,০০০-২৬০০১৬-১,০৭,২০০
০৮ ২৩,০০০-১১৫১৮-৫৫,৪৭০ ০৮ ৫২,০০০-২৩০০১৮-৯৩,৪০০
০৯ ২২,০০০-১১০১৮-৫৩০৬০ ০৯        ৪৭৫- (৫নং স্কেল) ৪৮,০০০-২০০০১৮-৮৪,০০০
১০ ১৬,০০০-৮০১৮-৩৮৬৪০ ১০        ৩৭৫- (৬নং স্কেল) ৪০,০০০-১৬০০১৮-৬৮,৮০০
১১ ১২,৫ ০০-৬৩০১৮-৩০২৩০ ১১ ৩৪,০০০-১৩২০২০-৬০,৪০০
১২ ১১,৩০০-৫৭০১৮-২৭,৩০০ ১২        ৩১০- (৭নং স্কেল) ৩০,০০০-১১৪০২২-৫৫,০৮০
১৩ ১১,০০০-৫৫০১৮-২৬,৫৯০ ১৩ ২৭,০০০-১০০০২৪-৫১,০০০
১৪ ১০,২০০-৫১০১৮-২৪,৬৮০ ১৪       ২২০- (৮নং স্কেল) ২৪,০০০-৮৬০২৪-৪৪,৬৪০
১৫ ৯,৭০০-৪৯০১৮-২৩,৪৯০ ১৫ ২১,৫০০-৭৫০২৪-৩৯,৫০০
১৬ ৯,৩০০-৪৭০১৮-২২,৪৯০ ১৬      ১৪৫- (৯নং স্কেল) ১৯,০০০-৬৪০২৪-৩৪,৩৬০
১৭ ৯,০০০-৪৫০১৮-২১,৮০০ ১৭ ১৭,০০০-৫৬০২৪-৩০,৪৪০
১৮ ৮,৮০০-৪৪০১৮-২১,৩১০ ১৮ ১৫,৫০০-৫০০২৪-২৭,৫০০
১৯ ৮,৫০০-৪৩০১৮-২০,৫৭০ ১৯ ১৪,০০০-৪৫০২৪-২৪,৮০০
২০ ৮,২৫০-৪২০১৮-২০,০১০ ২০      ১৩০-  (১০নং স্কেল) ১৩,০০০-৪২০২৪-২৩,০৮০
 
১ম জাতীয় বেতন স্কেল চালু সালের (১৯৭৩) তুলনায় মহিলাশ্রমের অংশীদারিত্ব দশগুণ বেড়ে  জিডিপিতে  প্রায় ৩৩% হয়েছে। তাই জেলাশহরের ভিত্তিতে চলমান ৮ম জাতীয় বেতন সর্বনিন্ম স্কেলের (২০নং) শুরুর বেভন-ভাতা  প্রায় ৩০% বেশী রয়েছে। এটা মুজুরী-কাঠামো বাড়ানোর আন্দোলনকে প্রভাবিত করে।  বেতন দ্বিগুণ করা  হলে প্রায় ৩০% বেশী দেয়া হবে। জুলাই, ২০২১-এ সর্বনিন্ম স্কেলের (২০নং) প্রম্ভিক মূল-বেভন ১৩,০০০/- হলে বাস্তবমুখী হবে। সব পর্যায়েই মূল-বেতন ন্যুনত ৫% বাড়বে। এজন্যে অন্তর্বর্তীকালীন  জাতীয় বেতন স্কেল  বাস্তবায়নে সংকট হবে না।  জুলাই, ২০২১-এ থেকে  মূল-বেভন বাস্তবায়নে  ২০২০/২১ অর্থবছরে বেতন-অনুদান খাতে মাত্র ২৫% ব্যয় বাড়বে।
 
জিডিপির প্রবৃদ্ধিস উপর প্রভাব (-) ১.০%  নেতিবাচক    +২.৫% উপরে  বাড়বে (চালুর বছরে ৪.০%)
মুল্যস্ফীতির উপর প্রভাব (-) ১.০%  নেতিবাচক    প্রায় +১.২৫% হ্রাস পাবে              
রাজস্ব আয়ের  উপর প্রভাব নেতিবাচক রয়েছে    অধিকভর ইতিবাচক হবে                  
রাজস্ব ব্যয়ের  উপর প্রভাব নেতিবাচক/অপচয় বাড়ছে   অধিকভর ইতিবাচক হবে
উন্নয়ণ বাজেটের উপর প্রভাব নেতিবাচক/অপচয়  বাড়ছে   অধিকভর ইতিবাচক হবে
দূনীতির  উপর প্রভাব নেতিবাচক রয়েছে ও বাড়ছে   অধিকভর ইতিবাচক হবে
প্রশাসনের  উপর প্রভাব নেতিবাচক রয়েছে ও বাড়ছে   অধিকভর ইতিবাচক  ও উন্নয়ণশীল  হবে
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নেতিবাচক রয়েছে ও বাড়ছে   অধিকভর ইতিবাচক ও উন্নয়ণশীল  হবে
   
বাস্তবায়ন নীতিমালাঃ

১)  ১লা জুলাই, ২০২১ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় বেতন স্কেলের মূল-বেভন প্রদান করা।

২)  মূল-বেভন নির্ধারেণর ক্ষেত্রে স্ব স্ব স্কেলে সমপরিমান ইনক্রিমেন্ট প্রাপ্য হবেন।  

৩)  আবাসন-ভাতার হার বাস্তষমুখী করতে হবে। আবাসন-ভাতার হার ৪০.০%, ৩৫.০%, ৩০.০%, ২৫.০% ও ২০.০%  করা হলে,  আবাসন গ্রেডের সাথে আরও সামঞ্জস হবে।   

৪)  জনসৎখ্যার ভিত্তিতে অফিস উপজেলায় হলে + ০.০%,  জেলা  বা সমপযায়ের  শহরে হলে + ৫.০%,  বিভাগ   বা সমপর্যায়ের  নগরে  হলে + ১০.০%,  বন্দর বা সমপযায়ের  হলে   + ১৫.০%,  ও  ঢাকামহানগরে হলে + ২০.০%, করা যেতে পারে।   

৫)  অন্যান্য ভাতাসূমহ আনুপাতিক হারে বাড়বে। 

৬)  চলমান অবসরভাতার ৫০% বা  স্ব স্কেলের শুরুর মূলবেভনের ৪০% (যেটি বেশী হবে)  হারে বাড়বে। 

৭)  বছরওয়ারী জনপ্রতি আয় বৃদ্ধির হারে (=প্রবৃদ্ধির হার +মূল্যস্ফীতির হার – জনসংখ্যা প্রবৃদ্ধির হার ) মূল-বেতন, অবসরভাতা, বয়স্কভাতা, দারিদ্র ভাতাসমুহ বাড়বে।

 

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading