বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমইউ) প্রিজন সেলে বসেই জুম অ্যাপসের মাধ্যমে মিটিং করতেন ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীন। তিনি গভীর রাতে ৪ থেকে ৫ দিন আধাঘণ্টা থেকে একঘণ্টার মতো জুম মিটিং করেছেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে।

শুক্রবার (১৬ জুলাই) সকালে এ বিষয়ে কথা হয় তদন্ত কমিটির প্রধান ঢাকা বিভাগের ডিআইজি ‍প্রিজন মো. তৌহিদুল ইসলামের সঙ্গে।

ডিআইজি ‍প্রিজন জানান, গত ১০ জুলাই আমরা তদন্ত শেষ করে কারা অধিদপ্তরে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। এক প্রতিবেদনে নানা বিষয়ের সঙ্গে ১৯টি সুপারিশনামা তুলে ধরা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, তদন্তে নেমে ভিডিও দেখে ১৪ জন কারারক্ষীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন অবসরে গেছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বাকি ১৩ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে, প্রিজন সেলে ডিউটিরত কারারক্ষীর দায়িত্ব অবহেলার কারণেই বন্দি রফিকুল এ সুযোগ নিয়েছে।

এছাড়া তদন্তে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি ৪ জেলারকে সতর্ক করা হয়েছে। সিসি ক্যামেরার পাশাপাশি সবকিছুর সুপারিশ নামায় রাখা হয়েছে। কারাবিধি লঙ্ঘন করায় বন্দির বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, অর্থের বিনিময় তাকে জুম মিটিং করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে-এ রকম কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে বন্দিকে জিজ্ঞাসাবাদে নিজেই স্বীকার করেছেন মধ্যরাতে বাটন মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করে তিনি মিটিং করেছেন। সেই মোবাইলগুলো পাওয়া যায়নি।

কারা অধিদপ্তর গঠিত তদন্ত কমিটি গত ১০ জুলাই আইজি প্রিজনস বরাবর ৩৮ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে।

এতে উল্লেখ করা হয়েছে- ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের প্রিজন সেলে বসে পাঁচদিন জুম মিটিং করেছেন।

বন্দি রফিকুল আমিনের প্রিজন সেলে বসে জুম মিটিং করার খবর প্রকাশের পর কারা অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলামকে সভাপতি, নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের জেলার শাহ রফিকুল ইসলামকে সদস্য সচিব ও মুন্সিগঞ্জ জেলা কারাগারের জেল সুপার মো. নুরন্নবী ভূঁইয়াকে সদস্য করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়া ১৭ কারারক্ষীর বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে আইনি ব্যবস্থা দেয় কারা কর্তৃপক্ষ। চার কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত এবং অবশিষ্ট ১৩ কারারক্ষীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানায় কারা অধিদপ্তর।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading