সিলেটের শিশু আবু সাঈদকে অপহরণ ও হত্যার দায়ে তিন আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। আসামিদের ডেথ রেফারেন্স এবং আপিল শুনানি খারিজ করে বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এই রায় দেন।
এই তিন আসামি হলেন বরখাস্ত হওয়া পুলিশ কনস্টেবল এবাদুর রহমান পুতুল, সিলেট জেলা ওলামা লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম রাকিব ও র্যাবের কথিত সোর্স আতাউর রহমান গেদা।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ। পুতুলের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাকিবের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা ও গেদার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. সিদ্দিকুর রহমান।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, সিলেটের রায়নগর শাহ মীর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র আবু সাঈদকে ২০১৫ সালের ১১ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অপহরণ করা হয়। পরে অপহরণকারীরা তার পরিবারের কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এরপর থেকে সাঈদকে উদ্ধারে অভিযানে নামে পুলিশ। অপহরণের দুইদিন পর ১৩ মার্চ রাত সাড়ে ১০টার দিকে সিলেটের বিমানবন্দর থানার কনস্টেবল এবাদুর রহমান পুতুলের ঝরনারপাড় সবুজ-৩৭ নম্বর বাসার ছাদের চিলেকোঠা থেকে সাঈদের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় সাঈদের বাবা আব্দুল মতিন কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে ওই বছরের ১৭ নভেম্বর সিলেটের বিমানবন্দর থানার সাবেক কনস্টেবল এবাদুর রহমান পুতুল, ওলামা লীগের নেতা রাকিব ও মাসুদ এবং র্যাবের কথিত সোর্স গেদার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
পরে ২৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০১৫ সালের ৩০ নভেম্বর সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুর রশিদ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বিমানবন্দর থানার কনস্টেবল আসামি এবাদুর রহমান পুতুল, র্যাবের কথিত সোর্স আতাউর রহমান গেদা ও সিলেট জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম রাকিবকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন।
অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় প্রচার সম্পাদক মাহিব হোসেন মাসুমকে খালাস দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া মৃত্যুদণ্ড পাওয়া সব আসামিকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেন আদালত।
পরে ওই মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হিসেবে হাইকোর্টে আসে। একইসঙ্গে আসামিরা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। উভয়টির শুনানি শেষে তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে আজ রায় দেন হাইকোর্ট।