মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি পরিবর্তনের কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট অনিশ্চয়তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (২৫ মে) গণভবনে সফররত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) প্রেসিডেন্ট ভলকান বজকির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মিয়ানমারে জাতিগত নিধনের শিকার জোরপূর্বক বিতাড়িত হয়ে ১ মিলিয়ন বা ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। মানবিক বিবেচনায় আমরা তাদের জায়গা দিয়েছি। কিন্তু তাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আমরা আলোচনায় ছিলাম। যদিও সেখানে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ছিল না।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। কিন্তু মিয়ানমারের এই পরিস্থিতির কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।’

এসময় রোহিঙ্গাদের বাসস্থানের বিষয়ে শেখ হাসিনা ভলকানকে জানান, ভাসানচর দ্বীপে এক লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে নেয়া যেতে পারে। এখন পর্যন্ত সেখানে ১৮ হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে নেয়া হয়েছে।’

জবাবে ভলকান এক মিলিয়নের বেশি রোহিঙ্গাকে মানবিক দিক বিবেচনায় আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেন।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্ট ভলকান বজকির রোহিঙ্গা সঙ্কট ছাড়াও আসন্ন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন, জলবায়ু পরিবর্তন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।

বাংলাদেশে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মহামারির মধ্যে বাংলাদেশ সরকার প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ ভাইরাস থেকে দেশের জনগণ এবং অর্থনীতিকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে।’

এ প্রসঙ্গে তিনি করোনাভাইরাস থেকে মানুষের প্রাণ বাঁচাতে এবং এর প্রভাব মোকাবিলা করে অর্থনীতিকে সচল রাখতে প্রণোদনা প্যাকেজ ও সব শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য অন্যান্য অর্থ সুবিধা দেয়ার কথা উল্লেখ করেন।

নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাধীনতার পরপরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নারীদের ক্ষমতায়িত করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। আমরা তার দেখানো পথে রাজনীতি থেকে প্রশাসন সমাজের সব সেক্টরে নারীর ক্ষমতায়ন করছি।’

জাতীয় সংসদ নেতা, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার এবং সংসদ উপনেতা চারজনই নারী- সে কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

সামাজিক সুরক্ষা আওতা বাড়ানোর পাশাপাশি সবার জন্য খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করেন বাংলাদেশ সরকার প্রধান।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নিউরো-ডেভেলপমেন্ট ডিসঅর্ডারস এবং অটিজম সম্পর্কিত বাংলাদেশ জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এবং অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading