নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় জোবায়ের হোসেন (৪৫) নামে এক মেম্বার প্রার্থী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চারজন।

আজ শুক্রবার সকালে সোনাদিয়া ইউনিয়নের চরচেঙ্গা বাজারে হামলার ঘটনাটি ঘটে।

নিহত জোবায়ের সোনাদিয়া ইউনিয়নের মধ্য চরচেঙ্গা গ্রামে বাসিন্দা। তিনি সোনাদিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেম্বার প্রার্থী ছিলেন।

আহতরা হলেন- মেহেদী হানান জীবন (২২), মো. ইরাক (৩৫), মো, রাজু (৩০), মো. রহিম (৩৮)। তাদের হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

জানা গেছে, হামলার ঘটনায় আহত ইরাকের পায়ের রগ কেটে গেছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডাক্তার শেখ মাহমুদ।

আহতরা সবাই আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মেহেদী হাসানের সমর্থক। এবং সকলেই সোনাদিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা।

জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শুরু থেকেই হাতিয়ার সোনাদিয়া ইউনিয়ন ছিল উত্তপ্ত। এবার সোনাদিয়া নৌকার মনোনয়ন পায় উপজেলা যুবলীগ নেতা মেহেদী হাসান। বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম এবার মনোনয়ন না পেয়ে খুবই বেপোরায়া হয়ে ওঠেন মাঠ দখলের জন্য। তিনি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

আজ সকালে বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে চরচেঙ্গা বাজারে ইউনিয়ন পরিষদের চাল বিতরণ করা হচ্ছিল। এ সময় চাল বিতরণে অনিয়মের কথা বলে কয়েকজন প্রতিবাদ করলে চেয়ারম্যানের লোকজন এসে তাদের প্রতিহত করে। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর চেয়ারম্যানের লোকজন অস্ত্র নিয়ে এসে বাজারে অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় বাজারে বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্ত ভাবে থাকা নৌকার প্রার্থীর সমর্থকদেরকে পিটিয়ে বাজার থেকে বের করে দেয় নুরুল ইসলামের লোকজন।

সোনাদিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেম্বার প্রার্থী জোবায়ের এ সময় তার কার্যালয়ে ছিলেন। তাকে সন্ত্রাসীরা বাজার থেকে চলে যেতে বলে। তিনি কথা না শোনায় হামলাকারীরা প্রথমে তাকে গুলি করে ও পরে দুই পায়ের রগ কেটে দেয়।

ঘটাস্থলে উপস্থিত আব্দুর রহিম নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মী জানান, ঘটনার পরপরই জোবায়েরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো আবুল খায়ের ঘটনার ব্যাপারে বলেন, ‘হামলার পরপরই পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুজনকে আটক করা হয়েছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদরে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’ এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading