গাজীপুরে ইয়াবা কারবার করে কোটিপতি বনে যাওয়া আলোচিত ছাত্রলীগ নেতা মো. রেজাউল করিমকে দুদিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।

গ্রেফতারের পর বুধবার সকালে পুলিশ রেজাউলকে গাজীপুরের ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে হাজির করে। সেখানে ৭ দিনের রিমান্ড দাবি করা হয়। বিচারক তার দুদিনের রিমান্ড মন্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নিদের্শ দেন।

মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ রেজাউলকে গ্রেফতার করে।

রেজাউল টঙ্গী সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসম্পাদক।

গত ২৬ এপ্রিল দৈনিক যুগান্তরে রেজাউল করিমের মাদক ব্যবসা নিয়ে ‘মাদক সম্রাজ্ঞীর সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতার ফোনালাপ ফাঁস’ শিরোনামে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই সংবাদ প্রকাশের পর পুলিশ প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত হয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আলোচিত এই ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেফতার করে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার জাকির হাসান এ বিষয়ে জানান, রেজাউলের বিরুদ্ধে মাদকের সম্পৃক্ততা ছাড়াও জিএমপির টঙ্গী পশ্চিম থানায় চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাকে মহানগরের টঙ্গী পূর্ব থানাধীন দত্তপাড়া এলাকায় তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, একইদিন নবীন হোসেন নামে আরেক মাদক কারবারিকে আটক করা হয়। রিমান্ডে থাকা আসামী জাকির হোসেনের স্বীকারোক্তি মোতাবেক পলাতক আসামি মো. রেজাউল করিম ও মো. নবীন হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার কাছ থেকে দুইশ’ ৯৪ পুরিয়া গাঁজা এবং ৫০০ পিস্ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।

ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে নবীন পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে উদ্ধার করা ৫০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রির উদ্দেশে রেজাউল করিম তাকে সরবরাহ করেছে। এ ঘটনায় টঙ্গী পূর্ব থানায় মামলা করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গাজীপুরের টঙ্গী সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক মো. রেজাউল করিম ও টঙ্গীর মাদক সম্রাজ্ঞী সাঈদা বেগমের এক লাখ পিস ইয়াবার চালান সংক্রান্ত ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর তারা নতুন কৌশলে মাদক ব্যবসা চালাচ্ছিল।

এছাড়া রেজাউলের ছিল অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, পরিবহন ও ঝুট ব্যবসা, এলাাকায় চাঁদাবাজি এবং মাদক ব্যবসার পুরো নিয়ন্ত্রণ। রাজনৈতিক অঙ্গনে তার নাম রেজাউল করিম হলেও আন্ডারগ্রাউন্ডের তিনি ছিলেন ‘সাগর’ নামে পরিচিত। পাশাপাশি তিনি একটি আনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘বাংলাদেশের সংবাদ টুয়েন্টি ফোর ডটকম’ এর প্রকাশক ও সম্পাদক।

আলোচিত এই ছাত্রলীগ নেতা কক্সবাজার ও টেকনাফ থেকে মাদক এনে টঙ্গীর বিভিন্ন কারবারিদের হাতে পৌঁছে দিতেন।

সর্বশেষ গত ১ এপ্রিল রেজাউল স্থানীয় ব্যবসায়ী সাজ্জাদুল ইসলাম মনিরের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ ঘটনায় ব্যবসায়ীর স্ত্রী শিল্পী আক্তার বাদী হয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানায় অভিযোগ করেন।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading