লকডাউন চলাকালে পণ্যবাহী পরিবহন যাতে কোনোভাবেই যাত্রীবাহী পরিবহনে রূপ না নিতে পারে- তা তদারকিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আজ সোমবার সকালে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) চলমান কার্যক্রম নিয়ে মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় যুক্ত হন।

আগামী বুধবার (১৪ এপ্রিল) থেকে সর্বাত্মক লকডাউনের ঘোষণায় লঞ্চ ও ফেরিঘাটে ঘরমুখো মানুষের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে, কেউ স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্বের বিষয়কে গুরুত্ব দিচ্ছে না, এ ধরনের মনোভাব করোনা সংক্রমণকে আরও অবনতির দিকে নিয়ে যেতে পারে। তাই সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে এ বিষয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।

সভায় ড্রাইভিং লাইসেন্স বিষয়েও কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। দীর্ঘদিন সীমিত পর্যায়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। লাইসেন্সের এনরোলমেন্ট এবং বায়োমেট্রিক প্রদানের কাজ শুরু হলেও তেমন গতি পায়নি, তাই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বিআরটিএ’র চেয়ারম্যানকে দ্রুততম সময়ে লাইসেন্স কার্ড প্রদানের ব্যবস্থা করার তাগিদ দেন মন্ত্রী।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘করোনাকালে গণপরিবহন চলাচলে শর্ত প্রতিপালনের ক্ষেত্রে অনেক মালিক শ্রমিক কথা রাখেনি, আবার কেউ রেখেছে। অনেকে সমন্বয়কৃত ভাড়া আদায় করেছে ঠিকই কিন্তু অর্ধেক আসন খালি রাখেনি।’ তিনি এসব বিষয়ে এবং গণপরিবহনে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলকসহ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের বিষয়ে কঠোর মনিটরিং জোরদার করার আহ্বান জানান।

প্রয়োজনে মোবাইল কোর্টের সংখ্যা বাড়িয়ে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, ‘জেলা পর্যায়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় জেলা প্রশাসকদের সহযোগিতা নেওয়া যেতে পারে। যেখানে অনিয়ম সেখানে ব্যবস্থা নিতে হবে, কাউকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না।’

গণপরিবহন পরিচালনায় সরকার যখন যে নির্দেশনা দিবে তা কঠোরভাবে কার্যকর করতে হবে। এ বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের বিশেষভাবে অনুরোধ জানান ওবায়দুল কাদের।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের সকলের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতি ও বিরোধী দলের ভূমিকা নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়ে থাকে। তিনি বলেন, ‘এ কথা অনেকাংশে সত্য, নানা ঘাত-প্রতিঘাত ও বাধা-বিপত্তির মধ্যে আমাদের গণতন্ত্র এখনো প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়নি।’ তিনি গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হলে সরকারি দলের পাশাপাশি একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনার শক্তিশালী বিরোধীদল অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে বলেও মন্তব্য করেন।

একটি দায়িত্বশীল বিরোধীদল গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে যথেষ্ট অবদান রাখতে পারে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘শক্তিশালী একটি বিরোধী দলের অনুপস্থিতিতে একদিকে যেমন উগ্র সাম্প্রদায়িক রাজনীতি সবল হওয়ার উর্বর ক্ষেত্র খুঁজে পায়, তেমনি সরকারি দলেরও একটি অংশের স্বেচ্ছাচারী হবার অবকাশ থেকে যায়।’ তাই গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে বিরোধীদলের শক্তিশালী ও দায়িত্বশীল ভূমিকার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading