এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউনে জরুরি সেবা ছাড়া সরকারি-বেসরকারি অফিস, কলকারখানা ও যানবাহন বন্ধ থাকবে। শুক্রবার জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমন তথ্য জানিয়েছেন।

সরকার আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে সর্বাত্মক লকডাউন দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নেওয়ায় এবং জনগণের অবহেলা ও উদাসীনতার কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

ঢিলেঢালা লকডাউনে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। আর বর্তমান করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি আরও কয়েক সপ্তাহ অব্যাহত থাকলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের একটি সূত্র।

তখন করোনায় আক্রান্ত বহু লোককেই ন্যূনতম চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে না।

তবে বর্তমানে চলমান লকডাউন আর সর্বাত্মক লকডাউনের মধ্যে পার্থক্য কী হবে? এখন যেভাবে লকডাউন চলছে, সর্বাত্মক লকডাউনের সময়ও কি একই পরিস্থিতি থাকবে? নাকি নিষেধাজ্ঞার আওতা বাড়বে?

এ নিয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, সর্বাত্মক লকডাউন বলতে যে চিন্তাটি করা হয়েছে সেটা হলো শুধু জরুরি সেবা ছাড়া আর কোনো কিছুই চলবে না। এখন যেমন কিছু কিছু বিষয়ে নমনীয়তা দেখানো হচ্ছে, সেটি হয়তো তখন আর করা হবে না।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের জনস্বাস্থ্যবিদেরাও এই পরামর্শ দিয়েছেন।

বর্তমানে যে লকডাউন চলছে সেখানে সব ধরনের গণপরিবহন চলছে। বাজার, শপিং মল খোলা হয়েছে। অফিস–আদালত, ব্যাংক, বিমা সবকিছুই খোলা। বেসরকারি খাতের সবকিছুই খোলা। খোলা রয়েছে শিল্পকলকারখানা।

তবে ওষুধের দোকান, নিত্যপণ্যের দোকান জরুরি সেবার মধ্যেই পড়ে। তাই এগুলো সর্বাত্মক লকডাউনেও খোলা রাখা হবে।

তবে নিত্যপণ্যের দোকান খোলা রাখার জন্য নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হতে পারে। আর সরকারের অন্যান্য জরুরি সেবা হলো বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন, স্বাস্থ্য, ত্রাণ বিতরণ, স্থলবন্দর, ইন্টারনেট, অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আনা–নেওয়া ও এর সঙ্গে জড়িত অফিসগুলো।

শুক্রবার নিজের সরকারি বাসভবনে সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দেশে করোনা সংক্রমণ এক ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার, সঙ্গে বাড়ছে জনগণের অবহেলা ও উদাসীনতা।

তিনি বলেন, এমতাবস্থায় চলমান এক সপ্তাহের লকডাউনে জনগণের উদাসীন মানসিকতার কোন পরিবর্তন না হওয়ায়, সরকার জনস্বার্থে আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য সর্বাত্মক লকডাউনের বিষয়ে সক্রিয় চিন্তা-ভাবনা করছে।

আগের দিন করোনাভাইরাসে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৭৪ মৃত্যুর সংবাদের পর মহামারি থেকে মানুষকে বাঁচাতে সামনে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হতে পারে বলে সতর্ক করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

করোনাভাইরাসের প্রকোপ দিন দিন বাড়তে থাকায় ৫ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত সারাদেশে শপিং মল, দোকান-পাট, হোটেল-রেস্তারাঁসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল।

বুধবার থেকে সিটি করপোরেশন এলাকায় সকাল-সন্ধ্যা গণপরিবহন সেবা চালু রাখার সিদ্ধান্ত দেয় সরকার।

গত রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে ১১ দফা নিষেধাজ্ঞায় সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত, ব্যাংক জরুরি প্রয়োজনে সীমিত পরিসরে খোলা রাখার সুযোগ দেওয়া হয়।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading