রাজধানীর ভাটারা থানাধীন কোকাকোলার ঢালীবাড়ী এলাকায় রাস্তায় পড়েছিল একটি ব্যাগ। সেদিক দিয়েই যাচ্ছিলেন রিকশাচালক মো. ইউনুস। ব্যাগটি দেখতে পেয়ে তুলে দেখেন প্রচুর টাকা। তখন ব্যাগটি নিয়ে চলে যান ইউনুস। তবে ব্যাগভর্তি এত টাকা থাকা সত্ত্বেও একটি টাকা খরচ করেননি ইউনুস। নিজের হেফাজতে রেখে টাকার মালিককে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজতে থাকেন। পরে টাকার খুঁজে অভিযানে নামা পুলিশের মাধ্যমে টাকাগুলো মালিকের হাতে তুলে দেন তিনি।

ঘটনাটি গত ৮ মার্চ রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘটে। রাজধানীর ভাটারা থানাধীন কোকাকোলা মোড় থেকে এক গাড়ি ব্যবসায়ী সঙ্গে ১৮ লাখ টাকা ও একজন সহকারীকে নিয়ে রিকশায় চড়ে বাসায় ফিরছিলেন। কোকাকোলা এলাকার ঢালীবাড়ী পৌঁছে টাকার ব্যাগটি ভুলে রিকশা রেখে নেমে যান।

ওই গাড়ি ব্যবসায়ী বাসার গেটে যাওয়ার পর মনে পড়ে তিনি টাকার ব্যাগ রিকশায় ফেলে এসেছেন। দ্রুত দৌঁড়ে গিয়ে যেখানে তিনি নেমেছিলেন, ওই স্থানের আশেপাশে কোথাও রিকশাচালককে খুঁজে পাননি। ব্যাগটিতে গাড়ি বিক্রির ১৮ লাখ টাকা ছিল। উপায় না পেয়ে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী পুলিশের দারস্থ হন। ভাটারা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি)।

জিডিতে ব্যবসায়ী বলেন, হারিয়ে যাওয়া ব্যাগটিতে ১৮ লাখ টাকা রয়েছে। এসব টাকা তার নিজের শো রুমের গাড়ি বিক্রির।

বুধবার সন্ধ্যায় ভাটারা থানার ওসি মোক্তারুজ্জামান এসব তথ্য জানিয়েছেন।

ওসি বলেন, ওই ব্যবসায়ীর জিডি পরই আমরা পুরো এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখি। ফুটেজে দেখা যায়, ওই ব্যবসায়ী রিকশা থেকে নামার সময় টাকার ব্যাগটি রিকশাতেই রেখে যান। ব্যাগটি যে যাত্রী রেখে গেছেন সেটি ওই রিকশাচালকও জানতেন না। ওই সময় চালক পুনরায় চালাতে শুরু করলে রিকশা থেকে ব্যাগটি পড়ে যায়। তখন ফুটেজে দেখা যায়, ওই ব্যাগটির ওপর দিয়ে কয়েকটি রিকশা গেছে, কিন্তু কেউ তুলেনি। পরে আরেকজন রিকশাচালক এসে ব্যাগটি তুলে দেখেন ভেতরে টাকা। এই টাকা ফুটেজেও দেখা যাচ্ছিল। তারপর টাকার ব্যাগটি নিয়ে ওই রিকশাচালক সোজা চলে যান।

ওসি বলেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে রিকশার নাম্বার প্লেট দেখে কয়েকটি ভাটারা এলাকায় সবক’টি গ্যারেজে খোঁজ করি। সেখানে মো. ইউনুস নামের ওই রিকশা চালককে শনাক্ত করতে পারি আমরা। এরপর তাকে পেতে অভিযান শুরু করা হয় বিভিন্ন জায়গায়। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছিল না। পরদিন মঙ্গলবার রাতে আমরা ১০০ ফিটের দিকে অভিযান চালালে সেখানে ওই রিকশাচালককে পেয়ে যাই।

ওসি বলেন, রিকশাচালক ইউনুসকে পেয়ে তাকে খোঁজার বিষয়টি বলতেই তিনি বলেন, আমার কাছে টাকা আছে। আমি মালিককে খুঁজছি। কিন্তু পাচ্ছি না। এরপর আমরা ইউনুসকে নিয়ে তার হেফাজতে থাকা টাকাগুলো উদ্ধার করি এবং তাকেসহ টাকাগুলো থানায় নিয়ে আসি। পরে থানায় ওই ব্যবসায়ীর হাতে টাকাগুলো তুলে দিই। এ সময় ওই ব্যবসায়ী খুশি হয়ে রিকশাচালক ইউনুসকে ৫০ হাজার টাকা উপহার হিসেবে দেন।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading