আল-জাজিরা সম্পূর্ণ অসৎ উদ্দেশে প্রতিবেদনটি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। একইসঙ্গে সশস্ত্র বাহিনীকে নিয়ে না খেলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আর্মি এভিয়েশন গ্রুপে আয়োজিত অনুষ্ঠান শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। আল-জাজিরার প্রতিবেদন সম্পর্কে তিনি বলেন, আল-জাজিরার মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বানও জানান জেনারেল আজিজ আহমেদ। এর আগে ওই অনুষ্ঠানের অফিসিয়াল বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘Don’t Play With Armed Forces’ (সশস্ত্র বাহিনীকে নিয়ে খেলবেন না)।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মতো একটি প্রতিষ্ঠান যেটা জাতির গর্ব, দেশের গর্ব, এই প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে নানা ধরনের অপপ্রচার চলছে। যাতে করে একটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। আমি আপনাদের স্পষ্ট করে বলতে চাই, সেনাবাহিনী অত্যন্ত প্রশিক্ষিত এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ একটা বাহিনী।

আগের থেকে অনেক বেশি সুসংগত। সেনাবাহিনীর চেইন অব কমান্ড অত্যন্ত কার্যকর এবং সেনাবাহিনীর প্রতিটা সদস্য ঘৃণাভরে এই ধরনের অপচেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান করে এসেছে অতীতে, এখনো করছে এবং বর্তমানে যা আছে তাকেও ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে যাচ্ছে।
সেনাপ্রধান বলেন, আমাদের চেইন অব কমান্ডের যারা আছে তারা সবাই এই ব্যাপারে সতর্ক আছি। আমি আশ্বাস দিতে চাই আপনাদেরকে যে সেনাবাহিনীতে এই ধরনের অপপ্রচার বিন্দুমাত্র আঁচ লাগতে দেবে না। সেনাবাহিনী বাংলাদেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং বাংলাদেশে সরকারের প্রতি অনুগত। বাংলাদেশ সরকারের সকল ধরনের আদেশ ও নির্দেশ পালনে সেনাবাহিনী সদা প্রস্তুত এবং বাংলাদেশের সেটা অভ্যান্তরীন হোক, বর্হিবিশ্বের হোক যেকোন সমস্যার মোকাবিলার জন্য আমরা সাংবিধানিকভাবে ঐক্যবদ্ধ।
সেনাপ্রধানের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আল জাজিরার প্রতিবেদনে যেসব কথা বলা হয়েছে সে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার ভাইদের বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার চালানো হয়েছে সেটা স্পষ্ট ব্যাখা দেওয়া আছে। এছাড়া আমার পরিবারের পক্ষ থেকে খুব শীঘ্রই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানানো হবে। তবে আমি সেনাপ্রধান হিসেবে বলতে পারি, সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি, আমার অবস্থা, আমার দায়িত্ব সম্পর্কে আমি সচেতন। কি করলে সেনাবাহিনীর দায়িত্ব ক্ষুন্ন হতে পারে, কি করলে আমার যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেটা খর্ব হতে পারে সে সম্পর্কে আমি সম্পূর্ণ অবগত।

সেনাপ্রধান বলেন, আল জাজিরা যেটা দিয়েছে সেটা সম্পূর্ণ অসৎ উদ্দেশ্যে দিয়েছে। কারণ সেদিন আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে কোন মামলা ছিল না, কোন সাজা ছিল না। তার আগেই যে মামলাটা ছিল সেটা থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।
বিভিন্ন দেশে চিত্রধারণ বিষয়ে সেনাপ্রধান বলেন, আমি সেনাপ্রধান হিসেবে অফিসিয়ালভাবে যখন থাকব তখন আমার নিরাপত্তা অফিসিয়ালভাবে নিশ্চিত করা হয়ে থাকে। সেখানে আমার অতিরিক্ত নিরাপত্তা নেওয়ার প্রয়োজন আমি মনে করি না। কিন্তু যখন আমি কোথাও ব্যক্তিগত ভ্রমণে থাকি সে সময় অফিসিয়াল কোন প্রটোকল ব্যবহার করা আমি সেটা কখনো সমীচীন মনে করি না। সেক্ষেত্রে সেই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তারা অসৎ উদ্দেশ্যে এটা করেছে।
বার বার কেন সেনাপ্রধানকে টার্গেট করা হয় এই প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান সাংবাদিকদের বলেন, এই প্রশ্নের উত্তর আমি আপনাদের উপর ছেড়ে দিলাম। আপনারা বুঝে নেন খুঁজে নেন কেন বাংলাদেশে সেনাবাহিনীর সেনাপ্রধানকে টার্গেট করা হচ্ছে। কারণ এই সেনাপ্রধানকে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছে। সেনাপ্রধানকে হেয় প্রতিপন্ন করা মানে প্রধানমন্ত্রীকে হেয় প্রতিপন্ন করা। আমি সম্পূর্ণভাবে সচেতন যে আমার কারণে কখনো আমার প্রতিষ্ঠান যেন বিব্রত বা বিতর্কিত না হয়।

তিনি বলেন, আপনারা যা কিছু শুনছেন তারা এগুলো বিভিন্ন জায়গা থেকে কাটপিস এবং অন্যান্য জিনিস যোগ করে করেছে। কিন্তু তাতে এদের কোন উদ্দেশ্য হাসিল হবে না। এটা আপনারা সাংবাদিকরা আপনাদের কলম দিয়ে সঠিক জবাব দিয়ে দিয়েছেন। এজন্য আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading