অমর্ত্য সেনকে অপমানের মাত্রা চড়াল বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বুধবার প্রশ্ন তোলেন, ‘‘জমিচোরকে কি নোবেল দেওয়া হয়েছে?’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘দেশ ওঁকে (অমর্ত্যবাবু) অনেক কিছু দিয়েছে। উনি দেশকে কী দিয়েছেন, তা নিয়ে রিসার্চ করতে হবে।’’
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ এবং ভারতরত্ন অমর্ত্যবাবুর প্রতি বিজেপির রাজ্য সভাপতির এই আক্রমণের তীব্র নিন্দা করেছে তৃণমূল, বাম এবং কংগ্রেস— সব পক্ষই। তৃণমূলের তরফে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘দিলীপবাবুরা যখন অমর্ত্য সেনকে জমিচোর বলতে পেরেছেন, তখন এর পরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকেও এমন বলতে ওঁদের আটকাবে না। এঁদের হাতে বাংলার সম্মান কেমন রক্ষিত হবে, তা মানুষ নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন।’’ বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যাঁরা অমর্ত্য সেনের নখেরও যোগ্য নন, তাঁরা তাঁকে নিয়ে নানা মন্তব্য করছেন। কাদের প্রশ্রয়ে দিলীপ ঘোষ এ সব করছেন, জানি না। কিন্তু এতে বাংলার মানুষের চেতনা এবং সংস্কৃতি সম্পর্কে ওঁদের দৃষ্টিভঙ্গি ধরা পড়ে যাচ্ছে।’’ কংগ্রেসের বর্ষীয়ান সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘অমর্ত্য সেনের মতো বিদগ্ধ মানুষ জমি চুরি করতে পারেন, এটা একমাত্র দিলীপ ঘোষেরাই কল্পনা করতে পারেন। কিছু না জেনে বিজেপির রাজ্য সভাপতি যে মন্তব্য করেছেন, সেটা শুধু অশোভন হয়েছে, তা-ই নয়, কোনও খোঁজখবর না নিয়ে এমন মন্তব্য কারও সম্পর্কেই করা অন্যায়। জমি নিয়ে বিতর্ক থাকলে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের উচিত অমর্ত্যবাবুর সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করা। এটা নিয়ে বাইরে এত হইচই কীসের?’’
অমর্ত্যবাবুকে আক্রমণ করায় বিজেপিকে কটাক্ষ করেছেন সমাজকর্মী মেধা পাটকরও। তিনি এ দিন শিলিগুড়িতে বলেন, ‘‘যাঁরা প্রশ্ন তোলেন, বিজেপি বেছে বেছে তাঁদেরকেই নিশানা করে। সমাজে অমর্ত্য সেনের যথেষ্ট নামডাক রয়েছে। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের নীতিগুলি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বলেই তাঁকে নিশানা করেছে বিজেপি।’’ মেধার আরও বক্তব্য, ‘‘প্রশ্ন তোলায় এর আগে বহু সমাজকর্মী ও মানবাধিকারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের জেলে ঢোকানো হয়েছে। আমিও তালিকায় আছি।’’ সুত্র, আনন্দবাজার পত্রিকা ।
শুদ্ধস্বর /আইপি