প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা পাচার করে কানাডায় পলাতক প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারসহ সব দণ্ডিত ও পলাতক আসামির বক্তব্য ও সাক্ষাৎকার গণমাধ্যমে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট। দুদকের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেল সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট (ভার্চুয়াল) বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেন।
এতে আদালত বলেন, বাকস্বাধীনতার নামে এ ধরনের পলাতক ও দণ্ডিত আসামির বক্তব্য টিভি নিউজ ও টকশোতে প্রচারের বিষয়টি আমরা অনুমোদন দেব না। কারণ এতে জনগণের কাছে বিচার বিভাগের ভাবমুর্তি ক্ষুণ্ণ হয়। সেজন্য একাত্তর টিভিসহ সব টিভি ও প্রিন্ট মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইউটিউবে পলাতক আসামিদের বক্তব্য প্রচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলো। পি কে হালদার সংক্রান্ত জারি করা রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সব ধরনের প্রচার মাধ্যমের ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।
কানাডায় আয়েশি জীবন-যাপন করা এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক এমডি পলাতক পি কে হালদারের বক্তব্য গত সোমবার রাত ১০টার খবরে প্রচারের পর এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তাকে সরাসরি সংযুক্ত করে একাত্তর টিভি। পরদিন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিষয়টি নজরে আনার পর এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেন আদালত। একাত্তর টিভিতে প্রচারিত পি কে হালদারের বক্তব্য এবং ‘টকশোর’ ভিডিও ক্লিপও তলব করেন হাইকোর্ট। আগামী ১০ জানুয়ারির মধ্যে তা হাইকোর্টের রেজিস্টারের দফতরে জমার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
আইএলএফএসএল গ্রাহকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পি কে হালদার বিদেশ পালানোর পর ৩০০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। পরে পিকে হালদার গত ২৮ জুন আইএলএফএসএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে তার দেশে ফেরার জন্য ব্যবস্থা নিতে আবেদন করেন।
আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে পি কে হালদার দেশে না ফেরায় ইন্টারপোলের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এরপর ঢাকার আদালত মঙ্গলবার তার সব স্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দিয়েছেন।