সতীর্থ নাসুম আহমেদকে ‘অপমানকর অঙ্গভঙ্গি’ করায় জরিমানা করা হয়েছে মুশফিকুর রহিমকে। সোমবার বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের এলিমিনেটরে ফরচুন বরিশালের ইনিংসে সতীর্থের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন বেক্সিমকো ঢাকার অধিনায়ক ও উইকেটকিপার।

লেভেল ১ এর ২.৬ অনুচ্ছেদের নিয়মভঙ্গ করায় মুশফিকের ম্যাচ ফির ২৫ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি তার নামের পাশে ১টি ডিমেরিট পয়েন্ট যোগ হয়েছে।

আইসিসির ৭.৫ অনুচ্ছেদের নিয়ম অনুযায়ী, টুর্নামেন্টে ৪টি ডিমেরিট পয়েন্ট পেলে এক ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হবেন মুশফিক।

সচরাচর এ ধরণের শাস্তিতে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ম্যাচ ফি কর্তন এবং এক বা দুই ডিমেরিট পয়েন্ট যোগ হয়। সেই হিসেবে খুব অল্পতেই পার পেয়ে গেলেন মুশফিক।

অপরাধ মেনে নেওয়ার তার আনুষ্ঠানিক শুনানির প্রয়োজন হয়নি। তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন দুই অনফিল্ড আম্পায়ার গাজী সোহেল ও মাহফুজুর রহমান। তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ম্যাচ রেফারি রাকিবুল হাসান মুশফিককে শাস্তি দেন। এর আগে সকালে ফেসবুকে বিবৃতি দিয়ে ক্ষমা চেয়েছিলেন মুশফিক। এর পরেই আসে শাস্তির ঘোষণা।

খেলার মাঠে ভুল-ভ্রান্তি হতেই পারে। তাতে অধিনায়করা সতীর্থদের বকা দিতেই পারেন। তাই বলে মারমুখী হয়ে তেড়ে আসার দৃশ্য দেখা যায় না বললেই চলে। কিন্তু বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ককে দেখা গেলো এমন অস্বাভাবিক কাণ্ড ঘটাতে। শুধু একবার নয়, দুইবার বল নিয়ে মুশফিক তেড়ে গেছেন সতীর্থ ও বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদের দিকে। মারতেও উদ্যত হয়েছেন; সঙ্গে চোখ-মুখে রাগ ও ক্রুদ্ধভাব তো ছিলই।

১৩ ও ১৭তম ওভারের এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে মিরপুর শের-ই-বাংলায় স্টেডিয়ামে। প্রথমবার আফিফ হোসেনের কাছে ছক্কা হজম করার পরের বলে নিজেই বল আটকাতে যান বাঁহাতি স্পিনার। একই সময়ে মিড উইকেটে দৌড় দেন মুশফিকও। বল হাতে নেওয়ার সময় দুইজনই একসঙ্গে জড়ো হন, তাতে বোলিং প্রান্তে আউটের সুযোগ হয়নি। বোলিং প্রান্ত ছেড়ে আসায় ক্ষিপ্ত হয়ে মুশফিক নাসুমের দিকে বল হাতে তেড়ে যান। পরবর্তীতে বিরক্তিমুখে বল তুলে দেন নাসুমের হাতে।

১৫০ রান তাড়ায় আফিফের ব্যাটে জয়ের আশায় ছিল বরিশাল। ঢাকার জন্য তার উইকেটটি খুব প্রয়োজন ছিল। শফিকুল ইসলামের বলে সেই সুযোগটি আসে ১০৬ রানে। ৫৫ রান করা আফিফ স্কুপ করতে গিয়ে ক্যাচ দেন শর্ট ফাইন লেগে। মুশফিক কিপিং থেকে সরে খুব সহজেই ক্যাচ তালুবন্দি করেন। সেখানে ফিল্ডিং করা নাসুমও ক্যাচ নিতে চেষ্টা চালান। তাতে ক্যাচ নেওয়ার পর দুজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে মুশফিক আবার তার দিকে ক্ষেপাটে আচরণ করেন। এবার প্রায় ঘুষি মারতে তেড়েই গিয়েছিলেন উইকেটকিপার।

মুশফিকের এমন আচরণের মুখোমুখি হয়ে দুইবারই হতবাক হয়ে যান নাসুম, বেশ বিমর্ষ লাগছিল তাকে। দল তখনও না জেতায় নিজের কষ্ট হয়তো চেপেই রেখেছিলেন। অবশ্য দুইবারই উদ্যত হওয়ার পর নাসুমের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে দেখা গেছে মুশফিককে। হারলেই বিদায়, এই সমীকরণের ম্যাচে ঢাকা জিতেছে ৯ রানে। কিন্তু মিরপুরের সবুজ গালিচায় মুশফিক যা করেছেন তা ক্রিকেট চেতনার সঙ্গে বড্ড বেমানান।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading