আগামী শিক্ষাবর্ষ (২০২১-২২) থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ঘ ইউনিট ও চারুকলা অনুষদভুক্ত চ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা বিলুপ্তির সিদ্ধান্ত বা প্রস্তাব আইনসম্মত নয় বলে দাবি করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট (মার্কসবাদী)।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমিটির এমন সিদ্ধান্তের ফল উচ্চশিক্ষার জন্য ‘মারাত্মক ক্ষতিকর’ হবে বলে মনে করে সংগঠনটি।

সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি করেছেন ছাত্রফ্রন্টের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক প্রগতি বর্মণ তমা।

গতকাল রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমিটির সভায় আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে পাঁচটি ইউনিটের পরিবর্তে তিনটি ইউনিটের আওতায় ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনার কথা জানান উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান।

তবে চলতি শিক্ষাবর্ষে (২০২০-২১) আগের নিয়মেই পাঁচটি ইউনিটের আওতায় পরীক্ষা নেয়া হবে।

বিবৃতিতে তারা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া বা প্রস্তাব দেয়ার কোনো আইনগত এখতিয়ার ডিনস কমিটির নেই। ডিনস কমিটি ভর্তি পরীক্ষাসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বা প্রস্তাব দিয়ে থাকলে তা আইনসম্মত নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কাঠামোতে ডিনস কমিটি নামে কোনো কিছুর আইনগত কোনো অস্তিত্ব নেই। এটা ডিনদের কার্যাবলি সমন্বয়ের একটি অনানুষ্ঠানিক ফোরাম ছাড়া অন্য কিছু নয়।

‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ ১৯৭৩-এর ২৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, পরীক্ষাসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার শুধু একাডেমিক কাউন্সিলের। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্তে ডিনস কমিটি নামক বিধিবহির্ভূত কাঠামোর অযাচিত হস্তক্ষেপ-প্রচেষ্টার নিন্দা জানাচ্ছি।’

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যারা যে বিভাগ থেকে পড়াশোনা করেছেন, তারা সেই বিভাগের জন্য সুনির্দিষ্ট ইউনিট অর্থাৎ বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ক ইউনিট, মানবিক বিভাগের জন্য খ ইউনিট এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের জন্য গ ইউনিটে পরীক্ষা দেবেন। এই পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে পরবর্তী সময়ে বিভাগ পরিবর্তন করা যাবে। অর্থাৎ একজন শিক্ষার্থী পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ইত্যাদি বিষয়ের ওপর পরীক্ষা দিয়ে নৃবিজ্ঞান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি কিংবা মার্কেটিংয়ের মতো বিভাগে ভর্তি হওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। কিন্তু এভাবে প্রকৃত মেধা যাচাই সম্ভব নয়।

তারা মনে করেন, কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের কোনো বিভাগে ভর্তি হতে হলে তাকে সংশ্লিষ্ট বিষয়েই পরীক্ষা দেয়া উচিত। তা ছাড়া চারুকলা অনুষদের অর্থাৎ চ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা এক ধরনের বিশেষায়িত ভর্তি পরীক্ষা।

‘সেই পরীক্ষা বাতিল করে খ ইউনিটের পরীক্ষা দিয়েই চারুকলা অনুষদে ভর্তি করানোর সিদ্ধান্ত হবে অযৌক্তিক ও চরম অদূরদর্শিতার পরিচায়ক। উচ্চশিক্ষা-স্তরে এমন সিদ্ধান্তের ফল হবে মারাত্মক ক্ষতিকর।’

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading