নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় মূল হোতা দেলোয়ারের আরো এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার ওই সহযোগীর নাম মাঈনউদ্দিন শাহেদ। গতকাল বুধবার (৭ অক্টোবর) দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে নোয়াখালী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।

এ নিয়ে ঘটনার মূল হোতা দেলোয়ার ও মামলার প্রধান আসামি বাদলসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আলমগীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশে একটি বিশেষ টিম ওই এলাকায় অভিযান চালায়। একপর্যায়ে দেলোয়ারের সহযোগী শাহেদকে আমরা গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। এ ঘটনায় অন্য আসামিদের আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

এর আগে গত মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে নোয়াখালী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করে দেলোয়ারের দুই সহযোগী সোহাগ ও নুর হোসেন রাসেলকে। এর পর গতকাল বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় দেলোয়ারের আরেক সহযোগী কালামকে। তাকে আজ বৃহস্পতিবার বেগমগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হবে। এ নিয়ে ওই নির্যাতনের ঘটনায় মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, তিন বছর আগে ভুক্তভোগী গৃহবধূর বিয়ে হয়। স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র বসবাস করছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে স্বামীর সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল না। গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে স্বামী তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন। স্থানীয় দেলোয়ার বিষয়টি জানতে পেরে এলাকার রহিম, বাদল, কালামসহ অন্য সহযোগীদের নিয়ে গৃহবধূর বাড়িতে যান। সেখানে তাঁরা স্বামীসহ ওই গৃহবধূ অনৈতিক কাজ করেছেন বলে অভিযোগ এনে নির্যাতন চালান। গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করেন তাঁরা। দেলোয়ারের বিরুদ্ধে মাদক কারবারের অভিযোগ রয়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, ওই গৃহবধূ নিজের সম্ভ্রম রক্ষার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন; কিন্তু নির্যাতনকারী কয়েকজন যুবক তাঁর পোশাক কেড়ে নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে কিছু বলতে থাকে। এ সময় তিনি হামলাকারীদের ‘বাবা’ ডাকেন এবং তাদের পায়ে ধরেন। কিন্তু এক যুবক কয়েকবার তাঁর মুখমণ্ডলে লাথি মারেন এবং পা দিয়ে মুখসহ শরীর মাড়িয়ে দেন। তাঁর শরীরে একটা লাঠি দিয়ে আঘাতও করতে থাকেন। তাঁর নগ্ন ছবি ধারণের চেষ্টা চালান তাঁরা। একজন হাত উঁচিয়ে তাঁকে উৎসাহ দেন। আরেকজন তাঁর শরীরের অবশিষ্ট পোশাক টেনে নেন। এ সময় ঘটনাটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেবেন বলে চিৎকার করেন একজন।

ঘটনাটি নজরে এলে গত রবিবার (৪ অক্টোবর) অভিযান চালিয়ে দুইজনকে আটক করে পুলিশ। পরে রাতেই থানায় পর্নোগ্রাফি এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন নির্যাতনের শিকার নারী। তবে ওই মামলায় নাম ছিল না দেলোয়ারের। ভয়ে তার নাম মামলায় তিন বাদ রাখেন বলে জানা যায়। একপর্যায়ে গত মঙ্গলবার রাতে অবশেষে ভয়ংকর সন্ত্রাসী ও ইয়াবা কারবারি দেলোয়ারের নামে ধর্ষণ মামলা করেন নির্যাতিতা ওই নারী।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading