সোজা কথা ডেস্ক রিপোর্ট: যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইসড প্রফেসর ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, রাজনীতিতে কমিটমেন্ট হচ্ছে সবচে বড় বিবেচনা। নেতৃত্বে আসার প্রক্রিয়াটা যদি ঠিক হয় তাহলে অন্য কিছুতে কিছু যায় আসে না। কেউ ব্যবসায়ী হলেই দল করতে পারবে না তা কিন্তু নয়।

রোববার বাংলাদেশ সময় রাত ন’টায় শুদ্ধস্বর ডটকম নামের একটি অনলাইন পত্রিকার সাথে এক লাইভ অনুষ্ঠানে ড. আলী রিয়াজ আরো বলেন, বাংলাদেশে একদিকে নতুন ধনীক শ্রেণীর সৃষ্টি হয়েছে। জিডিপি বেড়েছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে। এগুলো ইতিবাচক। তবে এর অন্য একটা দিকও আছে। তিনি যোগ করেন,  অন্যদিকে সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ ব্যাপক বৈষম্যের। নীচের ১০% এর দিকে তাকালে বিষয়টি বুঝা যাবে।এই যে নতুন ধনীক শ্রেণীর সৃষ্টি হয়েছে সে আসলে সবটা চায়; সে ক্ষমতা চায় সে অর্থ চায়। সে বিত্ত চায়। শুধু ক্ষমতা অর্থবিত্তই নয় সে আবার সম্মানও চায়। সে জন্য তার অনেক রকম রিফ্লেকশন আমরা দেখতে পাই। যদি এরা তৃণমূল থেকে নির্বাচিত হয়ে আসতো তাহলে এ পরিস্থিতি হোত না। পদ্ধতিকে নিয়ে প্রশ্ন করতে হবে। জবাবদিহিতা থাকতে হবে।

সামরিক অভিধান থেকে মার্শাল ল’ শব্দ তুলে দেয়ার প্রস্তাব সম্পর্কে প্রফেসর আলী রীয়াজ বলেন- এটাতো আইনগতভাবে এমনিতেই অবৈধ। এখন সেনাবাহিনীর পুস্তিকা বিধি বিধানে এ শব্দ থাকবে কিনা তা মুখ্য বিষয় নয়। মুখ্য বিষয় হলো একটি সরকারের সাথে সেনাবাহিনীর সম্পর্ক কেমন হবে কি থাকবে কে তাকে ওভারশি করবে- সিভিলিয়ানরা করবে, নির্বাচিত সরকারের বেসামরিক ব্যক্তিরা করবে, এ ক্ষেত্রে যারা তদারক করবে তারা কি তা দলীয় বিবেচনায় করবে? যুক্তরাষ্ট্রে ও এখন এ নিয়ে এত বছর পর কথা উঠেছে। কারণ কোথাও কোথাও আমরা দেখছি সামান্য ব্যত্যয় ঘটছে।

শুদ্ধস্বর ডটকমের যুগ্ম সম্পাদক বুলবুল তালুকদারের এক প্রশ্নের উওত্তরে      তিনি বলেন, আপনার প্রধান কাজ হচ্ছে সেনাবাহিনী ও অন্যান্য বাহিনী, প্রশাসন, দুর্নীতি দমন এবং নির্বাচনী ব্যবস্থা; এগুলোকে দলীয় রাজনীতির বাইরে রাখা। এগুলোর ছয়টার মধ্যে পাঁচটার মধ্যে যদি আপনি দলীয় রাজনীতি ডুকিয়ে ফেলেন এবং আশা করেন যে এরকম আপনারা বলবেন না। তারপর কাগজে পত্রে কি লেখা থাকবে না থাকবে তাতে কিছু যায় আসে না। তিনি বলেন- আমি প্রধানমন্ত্রীর সাথে তিনি একমত এমনকী বিশ্বের কোথাও যেন মার্শাল ল শব্দটি ব্যবহার না হয়। সম্প্রতি মালি’তে সেনা অভূত্থান হয়েছে। যদিও ইদানীংকালে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের ঘটনা অত্যন্ত সীমিত এসেছে। ২০১৮ সালে কোন সেনা অভূত্থান হয়নি। এটা একটা ইউনিক ইয়ার। তাতে কি হয়েছে? সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল করা, মার্শাল ল’ জারী করা সেগুলোর পথ ও পদ্ধতি বন্ধ হবে যদি রাস্ট্র ও ক্ষমতাসীনরা কাংখিত আচরণগুলো করে। সে আচরণগুলো সেনাবাহিনীকে, যে কোন বাহিনীকে এবং রাস্ট্রের যে কোন কোহের্সিভ অ্যাপারেটাসকে সিভিলিয়ান অথরিটির নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখে।সেটা করার জন্য একটা কমপ্লিটলি নন-পার্টিজান একটা ব্যবস্থা রাখতে হবে। সেটার দিকে আমাদের নজর দেয়া দরকার।

ড: আলী রীয়াজ বলেন, সংসদ, সংসদীয় কমিটি, বিচার বিভাগ, মিডিয়া জবাবদিহিতার সব জায়গাগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। জবাবদিহিতা ছাড়া গণতন্ত্র হবে না।গণতন্ত্র হয় না।

শুদ্ধস্বর/বিটি

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading