স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেছেন, ‘অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যার বিষয়টি আদালতের নির্দেশে তদন্তাধীন আছে। কিন্তু তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই এটা পত্রিকায় কীভাবে প্রকাশ হলো, সেটা আমার জানা নেই। যে প্রকাশ করেছে ও তথ্য সরবরাহ করেছে তারা কাজটি সঠিক করেনি। এ বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। আর ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে আমরা তাও দেখবো।’

বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে আমরা একটা তদন্ত করেছিলাম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি এই রিপোর্ট পর্যালাচনা করবে। যদি আদালত চায় আমরা দেবো। তবে প্রতিবেদন নিয়ে পত্রিকায় কী এসেছে, তা কতটা ঠিক আমার জানা নেই।’

তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান গত সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁনের কাছে এই প্রতিবেদন জমা দেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন কমিটির সদস্য লে. কর্নেল এস এম সাজ্জাদ হোসেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত চার সদস্যের তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন-কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শাহজাহান আলী ও পুলিশের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক জাকির হোসেন খান।

তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি একটি পুলিশি তদন্তের বিষয়। কমিটি তাদের দায়িত্ব পালন করেছে। এখন সচিব এটা বিশ্লেষণ করে দেখবেন। পরবর্তী সময়ে আদালত এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।’

এ প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে আজ বুধবার দেশের একটি প্রথম সারির পত্রিকায় সিনহা হত্যার তদন্ত প্রতিবেদন, পুলিশের কর্মকাণ্ড ছিল হঠকারী, অপেশাদারি শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনের বিষয়ে এমন মন্তব্য করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের ৫ দিনের মাথায় ৫ আগস্ট সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌসী বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতে এসআই লিয়াকত, ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ৯ পুলিশ সদস্যকেই বরখাস্ত করা হয়। মামলাটি তদন্ত করছে কক্সবাজার র‌্যাব-১৫।

আলোচিত এ হত্যা মামলার পুলিশের ৯ আসামি হলেন- টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস, টেকনাফ বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক মো. লিয়াকত, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) টুটুল ও কনস্টেবল মোহাম্মদ মোস্তফা। এদের মধ্যে আসামি মোস্তফা ও টুটুল পলাতক আছেন।

সিনহা হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ৭ পুলিশ, আর্মড পুলিশের ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) ৩ সদস্য ও টেকনাফ পুলিশের করা মামলার ৩ সাক্ষীসহ ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading