বিরোধী দল ও মতের ওপর সরকারের দমনপীড়ন বন্ধ না হলে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

লক্ষ্মীপুরের নবম শ্রেণির ছাত্রী হীরা মনিকে হত্যার প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, মানববন্ধন শেষ হলে আমাদের ছাত্রদলের কোনো ছেলেকে যে গ্রেফতার করবে, যে গুম করবে, সেটি আমরা বলতে পারি না। বিরোধী দল, বিরোধী মতকে দমনে ক্ষমতাসীনদের অভিযান অব্যাহত আছে।

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই– যদি আপনি করোনার মধ্যেও ছাত্রদলের ছেলেদের গ্রেফতার করেন, যুবদলের ছেলেদের গ্রেফতার করেন, আমরাও বসে থাকব না। আসুক আমাদের ওপর করোনার ঝড়, আমরা সব কিছু মনে নিয়েও রাস্তায় তুমুল আন্দোলন করব।

যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে বিএনপির এ নেতা বলেন, যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার প্রতিবাদে সব কিছু উপেক্ষা করে মানুষ রাস্তায় নামতে পারে, আমরাও করোনা উপেক্ষা করে রাস্তায় নামব এই ‘স্বৈরাচারী শাসনের’ বিরুদ্ধে।

যশোরে গুম হওয়া ছাত্রদল নেতা ইব্রাহিম হোসেনের সন্ধান এবং কুমিল্লার ছাত্রদল নেতা পারভেজ হোসেন ও লক্ষ্মীপুরে পালের হাটে পাবলিক হাইস্কুলের ছাত্রী হীরা মনিকে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত খুঁজে বের করে শাস্তির দাবিও জানান রিজভী।

একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দেয়ার অভিযোগে গ্রেফতার মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার ছাত্রদল নেত্রী রাহা মাহমুদা পলির মুক্তিরও দাবি জানান তিনি।

করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সরকারের ব্যর্থতার কঠোর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ৭১ শতাংশ হাসপাতালে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা সামগ্রীর অভাবে চিকিৎসা দেয়া যায়নি। অধিকাংশ হাসপাতালের নার্সদের করোনা মোকাবেলার প্রশিক্ষণ নেই। এভাবে কি করোনা মোকাবেলা সম্ভব?

মাস্কসহ চিকিৎসাসামগ্রী ক্রয়ে সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, এই করোনা নিয়েও আমরা দেখলাম মাস্ক ও অন্যান্য সামগ্রী ক্রয়ে কী দুর্নীতি হয়েছে! মন্ত্রীর ছেলেরা জড়িত, আওয়ামী লীগের ছেলেরা জড়িত। যেখানে দুর্নীতির পরিমণ্ডল রচিত হয়, সেখানে কী করে করোনার মতো বিশ্ব মহামারীকে ঠেকাবেন প্রধানমন্ত্রী? সেদিকে সরকারের কোনো ইচ্ছা নেই। কেউ যেন কথা বলতে না পারে, কেউ যেন ফেসবুকে প্রমাণপত্র ট্যাগ করতে না পারে, সে জন্য তৎপর শেখ হাসিনার সরকার। কিন্তু কোথায় কত রোগীর করোনা শনাক্ত করতে হবে, পরীক্ষার কিট নিতে হবে, সেগুলোর যন্ত্রপাতি আনতে হবে, সেদিকে তাদের খেয়াল নেই।

আয়োজক সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলের পরিচালনায় এতে বক্তব্য দেন সংগঠনের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিন।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading