বৃহস্পতিবার সংসদের উত্থাপিত ২০২০-২১ অর্থ বছরের বাজেট প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ক্ষমাতাসীন আওয়ামী লীগ। শুক্রবার সরকারি বাসভবন থেকে অনলাইনে দলের পক্ষ হেয়ে বাজেট নিয়ে কথা বলেছেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বাজেট করোনার বিদ্যমান সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দেয়ার বাস্তবসম্মত দলিল। জীবন-জীবিকার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে দেশকে এগিয়ে নিতে শেখ হাসিনা সরকারের সময়োচিত সাহসী চিন্তার ফসল।

বিএনপির পক্ষে বাজেটের ব্যাপকতা ও সম্ভাবনা অনুধাবন করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন সরকারি দলের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা গত ১১টি বাজেট ঘোষণার পর নানা ধরনের বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা মন্তব্য করেছেন। বরাবরই বলেছেন, বাজেট বাস্তবায়ন হবে না। বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে মাত্র ৫০ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিয়েছিল। আর এবার শুধু স্বাস্থ্য খাতেই ৪১ হাজার ২৭ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ৯৫ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।

তিনি বলেন, করোনার কারণে কয়েক মাস ধরে বিপর্যয়ের পরও বাজেটের আকার কমেনি, বরং বেড়েছে।

প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রীসহ বাজেট প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনা মোকাবিলার পাশাপাশি মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা নিশ্চিত করা, মানুষ যেন কষ্ট না পায়, সেদিকে লক্ষ রেখেই সব প্রতিকূলতাকে জয় করে বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনা সংকটের মধ্যেও সরকার তার নির্বাচনী ইশতেহারে দেয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর। মেগা প্রকল্পসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের গতিশীলতা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। এবারের বাজেট করোনার কবল থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের এক ভারসাম্যপূর্ণ বাজেট বলে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটি একটি জনবান্ধব ও জীবনঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক পরিকল্পনা। এডিবির আশঙ্কা, করোনা পরিস্থিতির কারণে ১৪ লাখ মানুষ কর্মসংস্থান হারাতে পারে। ফলে বিনিয়োগ বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে বাজেটে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

বাজেটে শিক্ষায় সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেয়া হলেও স্বাস্থ্য খাতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে এ খাতে অতিরিক্ত বরাদ্দ, প্রণোদনা, ক্ষতিপূরণ ইত্যাদির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। গত অর্থবছরের তুলনায় স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বেড়েছে ২৩ শতাংশ। প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের চেয়ে ৫ গুণ বেশি এবং দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলে তা দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেশে আনার পরিকল্পনাও বাজেট প্রস্তাবনায় রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।

সেতুমন্ত্রী বলেন, এবারের বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ধরা হয়েছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ। অনেকে এটাকে উচ্চাভিলাসী মনে করতে পারেন। তবে আওয়ামী লীগের কাছে মানুষের প্রত্যাশা বেশি, এ প্রত্যাশা পূরণে যত ঝুঁকি নিতে হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা নেবেন। অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে আগের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় কাঙ্ক্ষিত ভীত রচনাই এবারের বাজেটের লক্ষ্য।

ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপস্থাপিত বাজেট প্রতিক্রিয়া অনুষ্ঠানে যোগ দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া এবং উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading