বিশ্বের সব বর্ণের মানুষের জন্য সুবিচার নিশ্চিতের দাবি উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের হেফাজতে মৃত্যু হওয়া জর্জ ফ্লয়েডের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায়। মঙ্গলবার টেক্সাস স্টেটের হিউস্টন শহরের গির্জায় ফ্লয়েডকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে আসা মানুষ এ দাবি জানিয়েছে। পরে গির্জা থেকে গাড়িবহর নিয়ে তার মরদেহ হিউস্টন মেমোরিয়াল গার্ডেন্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ফ্লয়েডের মায়ের সমাধির পাশে তাকে সমাধিস্থ করা হয়। খবর বিবিসির।

যুক্তরাষ্ট্রের মিনিয়েপোলিসে পুলিশের নির্যাতনে মারা যান ৪৬ বছরের কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড। এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বর্ণবৈষম্যবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে কানাডা, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে। মঙ্গলবার হিউস্টনের ফাউন্টেন অব প্রেইস গির্জায় ফ্লয়েডের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে প্রায় ৫০০ অতিথিসহ উপস্থিত ছিলেন বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদ ও সেলেব্রিটি। ফ্লয়েডের স্মরণে বক্তব্য দিতে গিয়ে অতিথিরা বলেন, সদ্যপ্রয়াত ওই ব্যক্তির ‘একমাত্র অপরাধ ছিল কৃষ্ণাঙ্গ হয়ে জন্ম নেয়া।’

আগামী নভেম্বরে হতে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে ভিডিওর মাধ্যমে শোকবার্তা পাঠান। তাতে তিনি বলেন, জর্জ ফ্লয়েডের জন্য বিচার যখন পাওয়া যাবে, তখনই সত্যিকার অর্থে যুক্তরাষ্ট্র সব বর্ণের মানুষের সমান বিচার নিশ্চিত করার পথে এগিয়ে যাবে।’

স্থানীয় ডেমোক্র্যাট কংগ্রেস সদস্য আল গ্রিন মন্তব্য করেন, ‘ফ্লয়েডের একমাত্র অপরাধ ছিল যে তিনি কৃষ্ণাঙ্গ ছিলেন।’

বর্ণবৈষম্য নিরসনে ফ্লয়েডের ভাগনি ব্রুক উইলিয়ামস যুক্তরাষ্ট্রের আইনে পরিবর্তন আনার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কৃষ্ণাঙ্গদের অসুবিধায় ফেলার জন্যই কিছু আইন তৈর হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আইন এমনভাবে সাজানো হয়েছে যেন আফ্রিকান-আমেরিকানদের সিস্টেম কাজ না করে। এই আইন পরিবর্তন করতে হবে। আর কোনো বিদ্বেষমূলক অপরাধ দেখতে চাই না।’

নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা বর্ষীয়ান অ্যাক্টিভিস্ট আল শার্পটন বলেন, ‘আমি দেখতে পাচ্ছি পৃথিবীর যত জায়গায় যেসব মানুষ দাসদের দিয়ে কাজ করাতো, তাদের নাতি-নাতনিরা নিজেদের পিতামহদের মূর্তি ভেঙে ফেলছে।’

ফ্লয়েডের স্মরণে তিনি বলেন, ‘ঈশ্বর তাকে এমন একটি বিপ্লবের মধ্যমণির পদে আসীন করেছেন, যা সারাবিশ্বকে পরিবর্তন করবে।’

ওদিকে মিনেসোটার গভর্নর টিম ওয়ালজ ফ্লয়েডের শেষকৃত্যের স্মরণে স্থানীয় বাসিন্দাদের ৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড নীরবতা পালন করতে অনুরোধ করেন। মারা যাওয়ার আগে ঠিক এই পরিমাণ সময় একজন পুলিশ কর্মকর্তা ফ্লয়েডকে মাটির সঙ্গে হাঁটু দিয়ে চেপে ধরে রাখেন। এতেই শ্বাসরুদ্ধ ও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ফ্লয়েড।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading