করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সোমবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান উপ-কর কমিশনার শুধাংশ সাহা। তার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি উপজেলার গাড়ামাসি গ্রামে। মৃত্যুর পর নিজ বাড়িতে শুধাংশের মৃতদেহ দাহ করার কথা ছিল। কিন্তু করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করায় গ্রামের লোকজন বিরোধিতা করায় সেখানে দাহ করা সম্ভব হয়নি। পরে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার পাড়াগ্রামে (শুধাংশের শ্বশুর বাড়ি) পারিবারিক শ্মশানঘাটে তাকে দাহ করা হয়।

ঘাটাইলের ইউএনও অঞ্জন কুমার সরকার শ্মশানঘাটে উপস্থিত থেকে দাহ কাজ সম্পন্ন করেন। মানবতা আজ কোথায়! এ নিয়ে ইউএনও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যটাস দেন।

স্ট্যটাসটি হুবহু তুলে ধরা হল- কিছুদিন আগেও যে ছেলেটাকে নিয়ে এলাকাবাসী গর্ব করত? যার পরিচয় দিতে সবাই (আত্মীয় স্বজন, ভাই বোন, বন্ধু বান্ধব, প্রতিবেশী) গর্ববোধ করত? পরক্ষণেই সেই আদরের ছেলেটি চক্ষুশূল হয়ে গেল?? কি তার অপরাধ?? তার অপরাধ একটাই তিনি বৈশ্বিক মহামারির শিকার। তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে!!! ধিক্কার জানাই এ সমাজ ব্যবস্থাকে। যে সমাজ চুর, বাটপার, লুটতরাজ ,মুনাফাখোর, ঘুষখোর ,নারী পাচারকারী, মাদক পাচারকারী, টেন্ডারবাজ, ধর্ষক ,খুনী, দেশদ্রোহীতা কোন কিছুকেই এত ঘৃণার চোখে দেখে না ?? যতটা না ঘৃণ্য করোনাভাইরাসে আক্রান্তকারী অথবা আক্রান্তকারীর পরিবার।

বলছিলাম করোনায় আক্রান্ত হয়ে উপ-কর কমিশনার (বিসিএস ট্যাক্স) শুধাংশ সাহা মৃত্যুবরণ করার পর তার মৃতদেহ গ্রামের বাড়িতে দাহ করতে বাঁধা দেওয়ার কথা?? মানবিকতা কোথায় এসে দাড়ালো!! নিজেকে ভাগ্যবান মনে হচ্ছে সময়ের শ্রেষ্ঠ মেধাবীকে সম্মান জানাতে পেরে। শুধাংশু সাহারা কোন অপরাধ করেননি, তিনি বৈশ্বিক মহামারির শিকার।

শুধাংশ সাহার স্ত্রী মানসী দাশ বলেন, ‘আমি ও আমাদের ৬ বছরের মেয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকার বাসাতেই চিকিৎসা নিচ্ছি। করোনা আক্রান্ত হওয়ায় বাসা লকডাউন করা হয়েছে। বাসা থেকে বের হতে দিচ্ছে না। মৃত্যুকালে আমার স্বামীর কাছে যেতে পারি নাই। তার শেষকৃত্য দেখতে পারি নাই। মেয়েও তার বাবাকে শেষ দেখা দেখতে পেলো না।’

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading