বাংলাদেশ কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসার পাশাপাশি বাংলাদেশী চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য চিকিৎসক, নার্স এখানে পাঠাতে চীনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে। বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এই অনুরোধ জানান।

ড. মোমেন ৪৫ মিনিটের টেলিফোন আলাপে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে করোনাভাইরাস চিকিৎসায় নিবেদিত ঢাকার শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রো-লিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালকে সহায়তার জন্য চীন থেকে টেকনিশিয়নদের সমন্বয়ে বিশেষজ্ঞ মেডিকেল টিম পাঠানোর সম্ভবনার কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বাংলাদেশের করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের এই সংকটময় মুহূর্তে চীন থেকে ভেন্টিলেটর আমদানির সম্ভবনা নিয়েও কথা বলেন। ড. মোমেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এক বছরের জন্য চীনের সরবরাহকারীদের পক্ষে খোলা সমস্ত ব্যাক টু ব্যাক লেটার অফ ক্রেডিটের (এলসি) বিপরীতে পেমেন্ট স্থগিত রাখার বিষয় বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করেন। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বাংলাদেশের প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস দেন।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের রাষ্ট্রপতি শি’র মধ্যে সৌহাদ্যপূর্র্ণ বৈঠকের কথা স্মরণ করে ড. মোমেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন দ্রুত করার বিষয়ে সহযোগিতার অনুরোধ জানান। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শিগগিরই প্রত্যাবাসন শুরু হওয়া উচিৎ আশ্বস্ত করে বলেন, এ লক্ষ্যে চীনা সহায়তা অব্যাহত থাকবে।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উহান শহর এবং চীনের অন্যান্য অংশে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের সংকটময় মুহূর্তে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হ্যান্ড গ্লভস ইত্যাদি সহায়তা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

ড. মোমেন করোনাভাইরাস টেস্টিং কিটস, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম এবং ইনফ্রারেড থার্মোমিটার দেওয়ার জন্য চীন সরকারকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান। তিনি ‘জ্যাক মা ফাউন্ডেশন’ এবং ‘আলিবাবা ফাউন্ডেশন’-এর অবদানের কথাও উল্লেখ করেন। তিনি করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে উহান এবং চীনের অন্যান্য অঞ্চলে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সর্বাধিক যত্ন নেয়ার জন্য চীন সরকারের আন্তরিক প্রশংসা করেন। তিনি ৪ এপ্রিল চীনে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালনের জন্য চীন সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের সংহতি প্রকাশ করেন।

এদিকে, আজকের চীনা দূতাবাস বাংলাদেশী চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাংহাইয়ের এন্টি-কোভিড-১৯ ক্লিনিকাল বিশেষজ্ঞ দলের নেতা অধ্যাপক জাং ওয়েনহংয়ের মধ্যে একটি ভিডিও কনফারেন্সের সমন্বয় করেছেন। এই চীনা বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশী চিকিৎসকদের সঙ্গে তার অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেকের সঙ্গে যুক্ত ভিডিও কনফারেন্সে মারাত্মক ভাইরাস সম্পর্কে বাংলাদেশী চিকিৎসকদের প্রশ্নের জবাব দেন।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading