চলে গেলেন বাংলাদেশ সোসাইটির জনপ্রিয় সভাপতি কামাল আহমেদ। ৫ এপ্রিল ভোর পোনে পাঁচটায় নিউইয়র্কে দেহাবসান। পৈতৃকবাস বৃহত্তর সিলেটের বিয়ানিবাজারের লাউতা গ্রামে। শেষজীবনে গ্রামেই বানিয়েছিলেন চারতলা নতুন ভবন। কিন্তু নিজ চোখে তা না দেখেই বিদায় নিলেন। আমি একদা লাউতা’ পল্লীর সেই ভবনটি বেড়িয়ে এসেছি। ফলে নিউইয়র্কে আমার চোখ দিয়েই সাধের বাড়িটি উপভোগ করতেন।
নিউইয়র্কে তৃণমূল থেকে মহীরূহ সংগঠক হন কামাল আহমদ। প্রথমে ছিলেন ‘বিয়ানিবাজার সমিতি’র নির্বাচিত সভাপতি। অতঃপর নেতৃত্ব দেন ‘জালালাবাদ এসোসিয়েশনে’র। শীর্ষ সংগঠন ‘বাংলাদেশ সোসাইটি’র দ্বিতীয় মেয়াদের সভাপতি। গণমানুষের নেতা হিসেবে অর্জন করেন জনপ্রিয়তা। নিউইয়র্কে এটর্নি ব্রুশ ফিশারের অফিস কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন। বসবাস জ্যাকসন হাইটস সংলগ্ন এলমার্স্ট এলাকায়। কিডনীর সমস্যায় দীর্ঘদিন ভুগছিলেন। সর্বশেষ করোনা ভাইরাসেও যুগপৎ আক্রান্ত হন।
মৃত্যুর দু’মাস আগে সর্বশেষ দেখা জ্যাকসন হাইটসে। সংস্কৃতি-সংগঠক নূর ইসলাম বর্ষনের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে। শিল্পীদের আয়েজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেছিলেন। ‘পালকি সেন্টারে’র অনুষ্ঠানপূর্ব আড্ডায় একটি ঘটনা ঘটালেন। নিকটজনদের বললেন, একটা মজার তথ্য দেই। বিয়ানিবাজারের লাউতা গ্রামে আমি একটা বাড়ি বানিয়েছি। কিন্তু অসুস্থতা ও অন্যান্য কারণে বাংলাদেশে যেতে পারিনা। আমি আজ পর্য়ন্ত নিজের চোখে বাড়িটা দেখতে পারি নাই। কিন্তু আমাদের কবি সুলেরী ভাই সেটা দেখে এসেছেন। ছবিও তুলে এনে আমাকে দিয়েছেন। ওনার চোখ দিয়েই প্রাণের বাড়িটি উপভোগ করছি।
উল্লেখ্য, ২০১৭-তে আমি বিয়ানিবাজারের লাউতা গ্রামে যাই। প্রবাস সংগঠক এমাদ চৌধুরী, নূর আহমদ প্রমুখ অনুপ্রাণিত করেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মাসুম আহমেদ গ্রামটি দেখান। তিনিই দায়িত্ব নিয়ে কামাল আহমেদের বাড়িটি নির্মাণ করেছেন। মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ মতবিনিময় করেন। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের স্থানীয় কমান্ডারও কামাল ভাইকে স্মরণ করেন।
নিউইয়র্কে ঐ বাড়িটির বিষয়ে কামাল ভাই সকাশে আলাপ হয়। বলেছিলাম, নিচের একটি কক্ষে মিউজিয়াম করুন। আপনি অনেকগুলো সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। সেগুলোর ছবি, বিবরণ দিয়ে একটি কক্ষ সাজানো থাক। প্রায়শ অনেক মানুষ জনমানবহীন বাড়িটি দেখতে আসে। মিউজিয়ামটি দেখলে তারা একটি ধারণা পাবে। আপনার অ্যামেরিকার কর্মবহুল জীবনের প্রতিচ্ছবি তাতে ধরা থাক।
কামাল ভাই বলতেন, করবো, যদি আপনি গুছিয়ে দেন।
পরকালেও প্রশান্তিতে থাকুন প্রিয়-শ্রদ্ধেয় কামাল ভাই।
সালেম সুলেরী, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী কবি ।
More Stories
প্রধানমন্ত্রীর এসব বক্তৃতা লেখে কারা?
নষ্ট সময়ের নষ্ট নজির
ফেসবুকে স্ট্যাটাসে হেফাজতকে সমর্থন দিয়ে ছাত্রলীগ নেতার পদত্যাগ!