করোনা ধরা পড়েনি, তবুও কঠোর বিধিনিষেধ জারি উগান্ডায়

করোনা ভাইরাসের মূল প্রাণকেন্দ্র এখন ইউরোপ। প্রতিদিন সেখানে আক্রান্ত হচ্ছেন কয়েক হাজার মানুষ। মারা যাচ্ছেন কয়েকশ’। সে তুলনায় আফ্রিকার দেশগুলোতে এখন পর্যন্ত ভাইরাসটি তেমনভাবে সয়লাব হয়নি। কিন্তু তা সত্ত্বেও কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে দেশগুলোর প্রধানরা। এর মধ্যে অন্যতম উগান্ডা। দেশটিতে এখনো কোনো করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি সনাক্ত হয়নি। কিন্তু তার আগেই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে এক মাসের জন্য সকল বিয়ের অনুষ্ঠান, ধর্মীয় জমায়েতসহ সকল ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ করেছে সরকার।

দেশটির প্রেসিডেন্ট ইয়োভেরি মুসেভেনি বৃহস্পতিবার দেশজুড়ে এ নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছেন। এ খবর দিয়েছে সিএনএন।

খবরে বলা হয়, বড় ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধের পাশাপাশি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন মুসেভেনি। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে আগ থেকেই এমন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে তার সরকার।
মুসেভেনি বলেন, আজ পর্যন্ত উগান্ডার করোনা ভাইরাসের আক্রান্ত হওয়ার কোনো নিবন্ধিত ঘটনা নেই। কিন্তু কেনিয়া, তানজানিয়া ও রোয়ান্ডাসহ আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোয় ভাইরাসটির সংক্রমণ হয়েছে গত সপ্তাহে। ডেমোক্র্যাটির রিপাবলিক অব কঙ্গোতে তারও এক সপ্তাহ আগ থেকে সংক্রমণ শুরু হয়েছে।

ব্যাংক, হাসপাতাল, সুপারমার্কেট ও বাজারগুলো মুসোভেনির নিষেধাজ্ঞার আওতায় নেই। তবে যারা সেসব জায়গায় কাজ করেন তাদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সকলকে স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। সরকারের এ নিষেধাজ্ঞায় দেশটির বড় কিছু উৎসব আক্রান্ত হবে। কিন্তু মুসেভেনি জানান, নাগরিকদের ভালোর জন্যই এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
টিভিতে প্রচারিত বক্তব্যে উগান্ডার প্রেসিডেন্ট জানান, সকলে প্রার্থনা চালিয়ে যাবেন, কিন্তু নিজ বাড়ি থেকে। ধর্মীয় নেতারা টিভি ও রেডিও স্টেশন ব্যবহার করে ধর্ম প্রচারণার কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন। মাননীয় পোপ ফ্র্যান্সিস বরাবরের মতোই এ ব্যাপারে উত্তম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। সেইন্ট পিটারস স্কয়ারে বহুদিন ধরে করে আসা প্রথা স্থগিত করেছেন। তার বদলে টিভির মাধ্যমে ধর্ম প্রচারের কাজ চালাচ্ছেন।

মুসেভিনি বলেন, যেসব যুগলরা নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারবেন না, তারা এ সময়ের মধ্যে বিয়ে করতে পারবেন। তবে অবশ্যই সে অনুষ্ঠানে ১০ জনের বেশি মানুষ উপস্থিত থাকতে পারবে না। মৃতদের দাফনের ক্ষেত্রেও একই আদেশ কার্যকর থাকবে। তিনি আরো জানান, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেলে তার দাফনের দায়িত্ব পালন করবে সরকার। তাদের দাফনে কোনো আত্মীয়-স্বজনকে উপস্থিত থাকতে দেয়া যাবে না। এছাড়া, প্রতিটি বাসস্টপে হাত ধোঁয়ার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন পরিবহণ কর্তৃপক্ষকে। যাতে করে যাত্রীরা বাসে উঠার আগে স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে উঠতে পারে।

দেশের ভেতরে ভ্রমণের ব্যাপারেও জনগণকে সতর্ক করেছেন এ প্রেসিডেন্ট। বলেছেন, যদি গণপরিবহণ ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে একেবারে আবশ্যিক প্রয়োজন না হলে ভ্রমণ করবেন না। আফ্রিকার মধ্যে প্রথম দেশগুলোর একটি হিসেবে নাগরিকদের ওপর ও অন্যান্য ১৬ দেশের নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে উগান্ডা। বাইরের ওই ১৬ দেশের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেনও।

 

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.