মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। একই সঙ্গে এর জন্য যারা দায়ীদের সুষ্ঠু বিচারেরও দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। এর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক পরিচালক মীনাক্ষি গাঙ্গুলি বলেছেন, ন্যায়বিচার চেয়েছিলেন নুসরাত। সাহসী এই মেয়েটিকে ভয়াবহভাবে হত্যা করা হয়েছে। যৌন নির্যাতনের শিকারদের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার কতটা বাজেভাবে ব্যর্থ তা ফুটে উঠেছে এর মাধ্যমে। এই হত্যার মধ্য দিয়ে এটা জোরালো হয়ে উঠেছে যে, বাংলাদেশ সরকারকে যৌন নির্যাতনের শিকারদের বিষয়কে কতটা গুরুত্ব দিতে হবে। একই সঙ্গে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, নির্যাতিতরা নিরাপত্তার সঙ্গে আইনগত প্রতিকার পাবেন। তাদেরকে রক্ষা করতে হবে প্রতিশোধ নেয়ার হাত থেকে।

নিজস্ব ওয়েব সাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা বলেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।

একটি ধর্ষণ চেষ্টার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছিলেন নুসরাত। এরপর তাকে হত্যা করা হয়েছে। এর ফলে কর্তৃপক্ষকে যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া উচিত। পুলিশ বলেছে, নুসরাত জাহান রাফিকে (১৮) গত ৬ই এপ্রিল ফেনিতে একটি মাদ্রাসায় ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রের ছাদে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর কমপক্ষে চারজন তাকে জাপটে ধরে। তার গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। ২৭ শে মার্চ তিনি মাদ্রাসা অধ্যক্ষ সিরাজ উদৌলার বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ করেন। ওই মামলা তুলে নিতে অস্বীকৃতি জানানোর পর তার ওপর এই হামলা হয়। এতে নুসরাতের শরীরের শতকরা ৮০ ভাগ অংশ পুড়ে যায়। তিনি মারা যান ১০ই এপ্রিল। এ ঘটনায় দেশজুড়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়। যৌন নির্যাতন ইস্যুতে বাংলাদেশের আইন সংস্কার ও প্রয়োগের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ লিখেছে, ২৭ শে মার্চ নুসরাত যখন পুলিশে অভিযোগ করতে চান তখনকার একটি ভিডিওতে দেখা যায় অফিসার ইন চার্জ তাকে বলছেন, ঘটনাটি তেন বড় কিছু নয়। এর পর পরই অভিযুক্তের সমর্থকরা নুসরাতকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। তার পরিবারের সদস্যরা মিডিয়াকে বলেছেন, হামলার আগে তাদেরকে মামলা তুলে না নিলে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। কিন্তু নুসরাত ন্যায়বিচারের জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন। তার ভাই বলেছেন, ৬ই এপ্রিল হামলার পর নুসরাত তার পরিবারকে বলেছেন, হামলাকারীরা প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে করা মামলা তুলে নেয়ার দাবি জানিয়েছে। তিনি এতে রাজি না হওয়ায় তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে তারা।
এ মামলায় পুলিশ ১৩ জনের মধ্যে ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশি তথ্যমতে।

শুদ্ধস্বর/এন.এইচ

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading