আসুন একটি অংক কষি। তিনটি ছেলে মিলে একটি বাড়ি ভাড়া নিলো। ভাড়া ৩০ টাকা। তিন ছেলের সবাই ১০ টাকা করে ভাড়া পরিশোধ করলো ১০×৩=৩০ টাকা। বাড়ির মালিক তার দারোয়ান কে ৫ টি টাকা দিয়ে ওদের ফিরত দিতে বললো, মানে ভাড়া একটু কমিয়ে দিলো। দারোয়ান ওদের ৫ টাকা ফিরত দিলো। ছেলেরা প্রত্যেকে ১ টাকা করে নিজের কাছে রেখে দিয়ে বাঁকি ২ টাকা দারোয়ান কে দিয়ে দিলো ট্রিপস্। এবার হিসেব করে দেখা গেলো তিন জনের প্রত্যেকে ১ টাকা করে ফিরত পাওয়ায় যথারীতি প্রথমে প্রেরিত ১০- ১= ৯ টাকা করে ভাগে ভাড়া পরলো। অর্থাত ৯×৩= ২৭ টাকা এবং দারোয়ান কে দিয়েছে ট্রিপস বাবদ ২ টাকা। অর্থাত সর্বোমোট ২৭+২= ২৯ টাকা। প্রশ্ন হলো ৩০ টাকার ১ টাকা কই ? এখানে সর্বোমোট ২৯ টাকার হিসেব মিলে !!!
হ্যাঁ এখানেই কমরেড আলহাজ্জ মেনন সাহেবের কথা আসে। ২০১৪ তে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেনন সাহেবেরা পার্লামেন্টে মেম্বার হলেন, আবার সেই পার্লামেন্টে বসেই পার্লামেন্ট এবং সরকারের সাফাই গাইলেন পুরো পাঁচ বছর মন্ত্রী হয়ে। এবার রাতের ভোটে সেই জোটের ( জটের) সাথে নৌকায় থেকেই আবার পার্লামেন্ট মেম্বার তবে কপালে মন্ত্রীত্ব জুটলো না। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস । দীর্ঘ দিন বিমান মন্ত্রী থেকেও বিমানের টাকা চুরি বা বিমানকে সোজা পথে চালাতে পারলেন না। এত অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব কাজের বেলায় ঠন ঠন। সাড়া জীবন কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষের কথা বলে বলে মুখে ফেনা তুলেছেন, অথচ হাতে সুযোগ থাকা সত্বেও মধ্যে প্রাচ্যের সেই মেহনতি মানুষদের জন্য এয়ারপোর্টে একটু সুযোগ বা সম্মানের ব্যবস্থা করে যেতে পারলেন না !
এবার আবার মন্ত্রীত্ব হারিয়ে বিরোধী দলে বসার কথা শুনে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলেন। কেননা বিরোধী দলে বসতে হলে যে স্বৈরাচার এরশাদ কে নেতা মানতে হবে। আহ্হা কি যন্ত্রণা! গলায় জ্যান্ত কৈ মাছ আঁটকানোর মত অবস্থা । রাগে সহ্য করতে না পেরে মুখ ফোঁসকিয়ে বেড় হয়ে গেলো রাতে ভোট চুরির কথা ! তবে পার্লামেন্ট মেম্বার থাকতে কোনো অসুবিধে নেই। পদত্যাগ বলতে যে একটা শব্দ বাংলা অভিধানে আছে সম্ভবত সেটা ভুলেই গেছেন বা গিলে খেয়েছেন !
এই মেনন সাহেব এবার আবার তার কথিত ভোট চুরির পার্লামেন্টে নিজের গিন্নি কে সংরক্ষিত আসনে পার্লামেন্ট মেম্বার করে আনলেন ! কি লীলা খেলা। ইনারাই সাড়া জীবন বাম বাম , মেহনতি মানুষই সব, ধর্ম মিথ্যা বলে বলে বলে মুখে ফেনা তুলেছেন। এখন আবার নতুন পার্লামেন্ট মেম্বার বিবিকে নিয়ে আলহাজ্জ হতে সদূর মক্কা, মার ছক্কা !!!
সত্যি বলতে উপরের অংকের মত ইনাদের মূল্য কখনোই এই সমাজে মালিকের ফিরত দেওয়া ৫ টাকার বেশি ছিলো না । এখন ইনাদের কর্মে দেখা যায় সেই গায়েব হয়ে যাওয়া ১ টাকার মত অবস্থা । সেই গায়েবি ১ টাকা খুঁজে পাওয়া যেমন কঠিন , ঠিক তেমনই মেনন সাহেবদের বর্তমানে খুঁজে পাওয়াও সমান কঠিন বটে। আহ্হা ইনাদের মূল্য এখন সত্যি হারানো বা গায়েবি ১ টাকার সমান !!!
বুলবুল তালুকদার
সহকারী সম্পাদক, শুদ্ধস্বর ডটকম