আজ (শুক্রবার) ক্রাইস্টচার্চ হামলার এক সপ্তাহ পূর্ণ হলো। গত শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চের দুই মসজিদে হামলার ঘটনায় কমপক্ষে ৫০ জন প্রাণ হারায়। আহত হয় আরও বহু মানুষ।
সে হামলার শোক প্রকাশ করে আজ আল নুর মসজিদের কাছে হ্যাগলি পার্কে সমবেত হয়েছেন পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ।
শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদীর এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত ও আহততের পরিবার পরিজনও এখানে জড়ো হয়েছেন।-খবর রয়টার্স
আজ সেখানে যোগ দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা আরডান।
মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে তারা দুই মিনিট নিরবতা পালন করেন।
নিরবতা ভাঙার পর সেখানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিউজিল্যান্ড আপনাদের দুঃখে ব্যাথিত। আমরা সবাই এক।
এর আগে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর একটি হাদিসের উদ্ধৃতি দেন প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা।
এরপর তিনি বলেন, পারস্পরিক উদারতা, সমবেদনা এবং সহানুভূতিতে বিশ্বাসীরা একটি শরীরের মতো। যখন শরীরের কোনো একটি অংশ ব্যথা পায় তখন পুরো শরীরই সেই ব্যথা অনুভব করতে পারে।
এ বিবৃতিকালে মন্ত্রী ও নিরাপত্তা বাহিনীর বেষ্টনীর ভেতরে অবস্থান করা আরডানের মাথায় কালো পোশাক ও হিজাব পরা ছিলেন। এমনকি হ্যাগলি পার্কের নারী পুলিশেরাও কালো হিজাব পরেছিলেন।
আজ জুমার নামাজ পড়িয়েছেন ইমাম গামাল ফৌদা। গত সপ্তাহে আল নুর মসজিদে ভয়াবহ হামলা থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন ফৌদা।
তিনি খুতবায় বলেন, কয়েক লাখ মানুষের মনে আঘাত দিয়েছিলেন হামলাকারী। কিন্তু আজ ওই একই স্থানে আমি ভালোবাসা এবং সমবেদনা দেখতে পাচ্ছি।
সহানুভূতি প্রকাশের জন্য তিনি আরডানকে ধন্যবাদ দেন। তার খুতবা দেশটিতে জাতীয়ভাবে সম্প্রচার করা হয়েছে।
কিউ প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে তিনি বলেন, এটা বিশ্বনেতাদের জন্য একটা শিক্ষা। হিজাব পরে আমাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ ও পরিবারগুলোর প্রতি আপনার সহানুভূতির জন্য ধন্যবাদ।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মন ভেঙে গেছে কিন্তু আমরা ভেঙে পড়িনি। আমরা বেঁচে আছি, একত্রে আছি। কাউকে আমরা নিজেদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে দেব না।
ক্রাইস্টচার্চের হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আজ দেশটির প্রধান প্রধান জাতীয় দৈনিকগুলোর প্রথম পাতায় ছাপা হয়েছে আরবি শব্দ ‘সালাম’।
সালাম শব্দের পাশাপাশি পত্রিকাগুলোতে নিহতদের নামও ছাপানো হয়েছে।
গত সপ্তাহে শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূত শেতাঙ্গ সন্ত্রাসী ব্রেনটন টেরেন্ট হামলা চালায়। এতে ৫০ মুসল্লির প্রাণহানি ঘটে। এ হামলায় আরও অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়। এদিকে এ ঘটনাকে কালো অধ্যায় হিসেবে অভিহিত করেছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডার্ন।