দুই বাংলার লেখক, পাঠক ও প্রকাশকদের জন্য সুসংবাদ। এখন থেকে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বাংলা ভাষার লেখকদের বই প্রকাশ হবে দুই জায়গাতেই। সেলক্ষ্যে দুই বাংলার দুই প্রকাশনা সংস্থা একসঙ্গে কাজ করা শুরু করলো। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের অন্যপ্রকাশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পত্রভারতীর যৌথ উদ্যোগে যাত্রা শুরু করেছে ‘বইসাঁকো’।
সোমবার বাংলাদেশে জাতীয় জাদুঘরের মিলনায়তনে এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয়।
‘বইসাঁকো’র এই প্রবর্তনা অনুষ্ঠানে আনিসুজ্জামানের ‘বিদ্যাসাগর ও অন্যেরা’ বইটি কলকাতায় প্রকাশের বিষয়ে ‘পত্রভারতী’র সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সমরেশ মজুমদারের ‘কথামালা’ বইটি প্রকাশের চুক্তি স্বাক্ষর করে অন্যপ্রকাশ।
ইতিমধ্যে ‘বইসাঁকো’র উদ্যোগে পশ্চিমবঙ্গের পত্রভারতী থেকে বাংলাদেশের লেখকদের প্রকাশিত বইগুলোর মধ্যে রয়েছে- সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের ‘সেরা দশ গল্প’, ফরিদুর রেজা সাগরের ‘এবারো হাফডজন ছোটকাকু’, মারুফুল ইসলামের ‘নির্বাচিত ১০১ কবিতা’ ও মাজহারুল ইসলামের ‘হুমায়ূন আহমেদের মাকড়সাভীতি এবং অন্যান্য’।
অন্যপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত পশ্চিমবঙ্গের লেখকদের বইগুলোর মধ্যে রয়েছে- সমরেশ মজুমদারের ‘কথামালা’, সত্যম রায়চৌধুরীর ‘দুনিয়াদারি’ ও ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায়ের ‘আজও রোমাঞ্চকর : স্বাধীনতার রক্তঝরা গল্প’।
ঢাকায় ‘বইসাঁকো’ প্রবর্তনা উপলক্ষে সোমবার জাতীয় জাদুঘরের সিনেপ্লেক্সে বই সাতটির মোড়ক উন্মোচিত হয়। এই আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন আজন্ম অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী ও পশ্চিমবঙ্গের গবেষক অধ্যাপক ইমানুল হক। আরও বক্তব্য রাখেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, ফরিদুর রেজা সাগর ও মারুফুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম এবং পত্রভারতীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়।
আনিসুজ্জামান বলেন, বই আনা নেওয়া দস্যুতা করেও সম্ভব, আবার আইনিভাবেও আনা যায়। দস্যুতা করে বই আনানেওয়া করলে লেখক ও প্রকাশক উভয়ই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এদিক থেকে বইসাঁকো মহৎ উদ্যোগ। অন্যপ্রকাশ ও পত্রভারতীর এ উদ্যোগ সাহিত্যেও বন্ধন দৃঢ় করছে। বাংলা ভাষাভাষী অঞ্চলে যোগাযোগ যত বৃদ্ধি পাবে, মৈত্রীর বন্ধন তত দৃঢ় হবে।
হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র বই বিপননে দেশ ও বিদেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি। পৃথিবীর বড় বড় শহরে যেখানে বাংলা ভাষাভাষী রয়েছেন এবং যারা বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে ভালোবাসেন, তাদের কাছে বই পৌঁচ্ছানোর পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। আগামী ৫০ বছরে বাংলাদেশি পাঠকদের অন্য কারও বই পড়ার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকা লাগবে না। আমাদের দিকেই সবাই তাকিয়ে থাকবে।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, বইসাঁকো প্রশংসনীয় উদ্যোগ। যার মধ্য দিয়ে দুই বাংলার মধ্যে সাহিত্যের আদানপ্রদান হবে। পাঠকেরা নতুন স্বাদ পাবেন। প্রতিষ্ঠিত এবং নবীন লেখকদের লেখার মধ্য দিয়ে আমাদের সংস্কৃতির বন্ধন আরও দৃঢ় হবে।
ফরিদুর রেজা সাগর বলেন, ছোটকাকু চরিত্রটি সাহসী মানুষের প্রতিচ্ছবি। ছোটকাকুর মতো সাহসী মানুষ এখন চারপাশে রয়েছে। তাদেরই মতো কিছু মানুষের উদ্যোগে বইসাঁকোর যাত্রা শুরু হলো।