ক্রাইস্টচার্চের লিনউড মসজিদে শুক্রবার সন্ত্রাসী হামলার সময় অন্যকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের ৬৫ বছর বয়সী এক নারী।

লিন্ডা আর্মস্ট্রং নামে ওই নারী সবসময় উৎফুল্ল থাকতেন। দয়ালু হৃদয়ের কারণে সবাই তাকে বোন লিন্ডা নামে ডাকতেন। শুক্রবার নিজের জীবন দিয়েই তার প্রমাণ দিয়েছেন।-খবর খালিজ টাইমস ও বিবিসির।

খালিজ টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, অস্ট্রেলীয় এক শ্বেতাঙ্গ সন্ত্রাসী নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি করতে শুরু করলে অন্য নারীদের বাঁচাতে বন্দুকের সামনে নিজের বুক পেতে দেন।

দুই দশক আগে লিন্ড ইসলামধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। গত দুই বছর ধরে তিনি লিনউড মসজিদে নামাজ পড়তেন।

মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি ইডওয়ার্ড ওয়াসওর্থ বলেন, আপনি কে কিংবা কোথা থেকে এসেছেন, সেটিকে কোনো ব্যাপার বলে মনে করতেন না তিনি। আপনার কিছু দরকারে তার কাছে গেলে, তিনি অবশ্যই একটি উপায় বাতলে দিতেন।

নেলসন ও টাসম্যান জেলায় দাবানলে আক্রান্ত হয়ে বাস্তচ্যুত মানুষের সহায়তায় তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। মসজিদ সেক্রেটারি বলেন, ওই নারী গাড়িভর্তি পণ্য নিয়ে আক্রান্তদের সহায়তায় চলে যেতেন।

‘বোন লিন্ডা সবসময় আমাকে বলতেন, ইসলামে আসার পর তিনি একটি শান্তিময় জীবন কাটিয়েছেন। প্রতিটি ভাই ও বোনই ছিল তার পরিবার। এতেই তিনি সত্যিকার শান্তি পেতেন।’

হামলার সময় প্রাণে বেঁচে যাওয়া লিনউড মসজিদের ইমাম লতিফ আলাবি বলেন, সেদিন সেখানে অন্য নারীরাও নামাজ পড়তে আসেন। তিনি একপাশ থেকে অন্যপাশে সরে যাচ্ছিলেন। অন্যদের শরীরে যাতে গুলি না লাগে, সে জন্য তিনি সামনে চলে আসেন।

নিউজিল্যান্ডে জন্ম নেয়া লিন্ডা বেড়ে ওঠেন অকল্যান্ডে। মসজিদ এলাকার বাসিন্দারা তাকে ভালোবাসতেন।

তার নাতি কিরণ গোস বলেন, তার ভেতরে শিশুদের মতো নিষ্পাপ একটা চরিত্র ছিল। পর্যটক, অভিবাসী ও শরণার্থী বান্ধব ছিলেন। তাদের জন্য তার দুয়ার, মন ও রান্নাঘর সবসময় উন্মুক্ত থাকত।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading