একাদশ সংসদ নির্বাচনে গণফোরামের প্রার্থী হিসেবে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জোট ঐক্যফ্রন্ট থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে জয়ী সুলতান মো. মনসুর আহমেদ ‘সময়মতো’ শপথ নেবেন। সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে ড. কামাল হোসেন বারণ করলেও তা মানবেন না তিনি।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে সুলতান মনসুর বলেন, দলীয় ফোরামে কী আলোচনা হয়েছে সেটা আমি শুনিনি। অসুস্থতার কারণে আমি বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারিনি। তবে জনগণ যেহেতু আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে তাই আমি শপথ নেব। সেটা সময়মতো নেব। বৃহস্পতিবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের নিয়ে বৈঠকের পর কামাল হোসেন বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত উনাদের (দুইজনকে) স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছে যে, এটা (শপথগ্রহণ) করবেন না।

সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করায় জোটের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সুলতান মনসুর সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিলে বিএনপি তার সদস্য পদ বাতিলের জন্য নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিলে তার সদস্য পদ থাকবে না।

ডাকসুর সাবেক ভিপি ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুলতান মনসুর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকও হয়েছিলেন। ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থার মধ্যে সংস্কারপন্থি হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর ২০০৯ সালের সম্মেলনে দলীয় পদ হারান তিনি। এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিন্ন হয়। এবার জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে কামাল হোসেনের গণফোরামে ভেড়েন তিনি। গত ৩০ ডিসেম্বরের ওই নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

এরই মাঝে রাজনৈতিক অঙ্গনে চাউর হয়েছে আওয়ামী লীগে ফিরছেন সুলতান মনসুর। যেকোন দিন তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ঘরে ফেরা’র ঘোষণা দিতে পারেন। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় গণভবনে গিয়েছিলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতের বিষয়ে জানতে চাইলে সরাসরি জবাব না দিয়ে সুলতান মনসুর বলেন, নেত্রীর (শেখ হাসিনা) সঙ্গে আমার বিভিন্ন সময়ে যোগাযোগ হয়। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সুলতান মনসুর বলেন, আমি তো আওয়ামী লীগ ছাড়িনি। আওয়ামী লীগ আমাকে বহিষ্কারও করেনি। সক্রিয় হওয়ার বিষয়টি ভবিষ্যতে দেখা যাবে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার নেত্রী। আমার শেষ ঠিকানা বঙ্গবন্ধু, জয় বাংলা। এখানে কোনো আপস নেই। তিনি আরো বলেন, আমিও নেত্রী সম্পর্কে কোনো দিন কোনো কটু কথা বলিনি, নেত্রীও আমার নাম উচ্চারণ করে আমার সম্পর্কে কোনো দিন কটু কিছু বলেননি।

প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় একজন সদস্য সাক্ষাতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ডাকসু নির্বাচনে সুলতান মনসুরসহ সাবেক দুই নেতাকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গত শনিবার দলের একটি সভা শেষে ডাকসু নির্বাচনের প্রসঙ্গ উঠে আসে। এ সময় আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বলেন, ওরা মাহমুদুর রহমান মান্নাকে নিয়ে নামবে। আমরাও আখতারুজ্জামান ও সুলতান মোহাম্মদ মনসুরকে নামাব।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading