
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের প্রতি যুক্তফ্রন্ট আস্থাশীল বলে জানিয়েছেন বিকল্প ধারার মহাসচিব মেজর আব্দুল মান্নান। তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন সংবিধান ও আইনের আলোকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দৃঢ়তার কথা জানিয়েছে। কমিশন আমাদের বলেছে, সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রশ্নে জাতি যাতে হতাশ না হয়, তারা সে চেষ্টা করবে। তারা আরও বলেছে, সুষ্ঠু নির্বাচন করে তারা ইতিহাস তৈরি করবে। তাদের বক্তব্যের দৃঢ়তায় আমরা আশ্বস্ত। সবাই আস্থা ও আশা নিয়ে বাঁচে। আমরাও কমিশনের প্রতি আস্থা রাখতে চাই।’
মঙ্গলবার (৬ নভেম্বর) বিকালে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে একঘণ্টার বৈঠক শেষে বিকল্প ধারার তিনি এসব কথা জানান।
তফসিল প্রসঙ্গে মেজর আব্দুল মান্নান বলেন, ‘অন্য কারও চাপে তফসিল পেছানোর সম্ভাবনা রয়েছে কিনা আমরা জানতে চেয়েছিলাম। কমিশন বলেছে, তফশিল কারও চাপে পেছানো হবে না, যথাসময়ে তফসিল হবে। তফসিলের ব্যাপারে সরকার পক্ষ থেকে কোনও চাপ নেই। কোনও চাপ আসবে বলেও মনে করি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কমিশনকে যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেছি। ২০০৬ সালের অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা বলেছি, তফসিল পেছানো হলে সাংবাবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হবে এবং এতে অনেক ঘটনা ঘটতে পারে।’
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) বিষয়ে আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আমরা কমিশনকে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করতে বলেছি। বলেছি, যদি সব কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করতে পারতেন, সেটা ছিল ভিন্ন কথা। ইভিএম ব্যবহার হলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। কয়েকটি কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করবেন কেন? সেজন্য আমরা এভিএম ব্যবহার না করতে বলেছি।’
পুলিশিং দায়িত্ব দিয়ে সেনা মোতায়েনের দাবি জানানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনা মোতায়েন করলে তারা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে না। আমরা বলেছি, পুলিশিং জব দিয়ে তাদের নিয়োগ দিতে এবং প্রত্যেক কেন্দ্রে ৪-৫ জনকে দায়িত্ব দিতে। এতে জনগণের আস্থা বাড়বে।’
নির্বাচন পেছানো নিয়ে আপনারা ঐক্যফ্রন্টের উল্টো দাবি দিয়েছেন কিনা, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা কারও উল্টা দাবি করি নাই। জনগণের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছি। নির্বাচন পেছানো হলে শূন্যতা আসবে। এই শূন্যতায় যাতে অন্য কোনও শক্তি চলে না আসে, সেজন্য আমরা এ দাবি করেছি।’
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বিকল্প ধারার মহাসচিব বলেন, ‘যুক্তফ্রন্ট হচ্ছে মাদার অ্যালায়েন্স। আর ঐক্যফ্রন্ট হচ্ছে বেবি অ্যালায়েন্স। আমরা আমাদের দাবির মধ্যে সবসময় ছিলাম, এখনও আছি। বরং তারা আমাদের ৫ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, সঙ্গে নতুন দুই দাবি করেছে।’
মঙ্গলবার বিকাল ৫টার দিকে আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদার সঙ্গে নির্বাচন ভবনে বৈঠক করে।