
জাতীয় সংসদে সদ্য পাস হওয়া ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’-এর কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ আট দফা দাবি আদায়ে সারাদেশে ডাকা ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। কর্মবিরতির প্রথম দিনে রাস্তায় সাধারণ পরিবহনের কোনো গাড়ির দেখা মেলেনি। ফলে অফিসগামী ও সাধারণ জনগণকে পড়তে হচ্ছে বিপাকে।
এই ৪৮ ঘণ্টায়ও তাদের দাবি বাস্তবায়ন না হলে পরে আরো কঠোর কর্মসূচি প্রদান করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবহন শ্রমিক নেতারা।
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা এ কথা বলেন। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে : সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ সংশোধন করা; সড়ক দুর্ঘটনায় ৩০২ ধারায় মামলা গ্রহণ না করা; ৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান বাতিল ও জামিনযোগ্য ধারায় মামলা করা; টাঙ্গাইল জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সদস্য হাসমত আলীসহ মালিক ও শ্রমিক মুক্তি, পুলিশের হয়রানি বন্ধ করা, গাড়ির কাগজপত্র চেকিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করা, পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধাসংবলিত ট্রাক টার্মিনাল বা স্ট্যান্ড নির্মাণ করা, গাড়ির মডেল বাতিল করতে হলে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেয়া, সহজ শর্তে ভারী যানবাহন চালককে ভারী লাইসেন্স দেয়া এবং এর আগ পর্যন্ত হালকা বা মধ্যম লাইসেন্স দিয়ে ভারী যানবাহন চালানোর সুযোগ দেয়া, সারা দেশে গাড়ির ওভারলোডিং বন্ধ করা এবং ফুটপাথ, ওভারব্রিজ, আন্ডারপাস ও জেব্রাক্রসিং ব্যবহার নিশ্চিত করা।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী শনিবার রাতে নয়া দিগন্তকে বলেন, কর্মরিবতির মধ্য দিয়ে প্রথমে তারা দাবি আদায়ের চেষ্টা করবেন। যদি তা না হয় পরে আরো কঠোর কর্মসূচি প্রদান করা হবে। তিনি বলেন, পরিবহন শ্রমিকেরা তাদের দাবি আদায় না করে ঘরে ফিরে যাবে না।
এ দিকে রাজধানীতে গণপরিবহন না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ পথচারীকে। পথচারীদের বিভিন্ন মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় গাড়ির জন্য। পরিবহন শ্রমিকদের বিভিন্ন বাস টার্মিনালে সঙ্ঘবদ্ধভাবে মহড়া দিতে দেখা যায়, যাতে কোনো পরিবহন চলাচল করতে না পারে
আরো পড়ুন :
শ্রমিক ধর্মঘটের খবর ‘জানেন না’ শাজাহান খান!
নৌমন্ত্রী শাজাহান খান দাবি করেছেন চলমান বাস ধর্মঘট নিয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
তিনি বলেন, ‘আমি এটা নিয়ে কিছু বলতে চাই না’।
রোববার সচিবালয়ে তার দফতর থেকে বের হলে সাংবাদিকরা হঠাৎ করেই সারাদেশে বাস ধর্মঘট বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এমন বিস্ময়কর দাবি করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি জানি না, আমি কিছু জানি না। আমি এটা নিয়ে কিছুই বলবো না।’
আপনি শ্রমিকদের সংগঠনের দায়িত্বশীল ব্যক্তি – সাংবাদিকদের করা এমন প্রশ্নের জবাবেও তিনি কোনো কোনো কথা বলতে চান নি।
সড়ক পরিবহন আইনের কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ ৮ দফা দাবিতে রোববার থেকে সারাদেশে বাস ধর্মঘট শুরু হয়।
ধর্মঘটের কারণে রাজধানী ঢাকায় সকাল থেকে অফিসগামী মানুষের ব্যাপক ভোগান্তি দেখা গেছে। এমনকি শ্রমিকরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে মটরসাইকেল থেকে ড্রাইভার ছাড়া অতিরিক্ত যাত্রীদের জোর করে নামিয়ে দেন। ফলে উবার, পাঠাওসহ বেশকিছু রাইড শেয়ারিংও করতে পারছেন না সাধারণ যাত্রীরা।শুদ্ধস্বর রিপোর্ট