received_349305359144138.jpeg

শুদ্ধস্বর ডটকমঃ কেমন আছেন?

এম সাইফুল্লাহ সাইফুলঃ আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহর রহমতে ভাল আছি।

শুদ্ধস্বর ডটকমঃ সামনেই তো একাদশ জাতীয় নির্বাচন। আমরা ‍শুনেছি আপনি গতবারের মতো এবারও নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী। এ ব্যাপারে জানতে চাই..

এম সাইফুল্লাহ সাইফুলঃ আমি ২০০৮ সালে প্রথম মনোনয়ন চাই। কামাল মজুমদার তখন সবার সামনে বলেছিলেন,এবারই আমার শেষ নির্বাচন এর পরেরবার সাইফুল নির্বাচন করবে। তারপর ২০১৪ সালেও তিনি করেছেন। শুনেছি এবারও তিনি মনোনয়ন চাচ্ছেন। তার বয়স হয়েছে। নেত্রী সবই জানেন। বরাবরের মতোন এবারও নৌকার মনোনয়ন চাচ্ছি। নেত্রী  চাইলে অবশ্যই নৌকার হয়ে নির্বাচন করব। এক্ষেত্রে নেত্রীর কথাই শেষ কথা। আমি মনে করি প্রতীক নৌকা কিন্তু প্রার্থী শেখ হাসিনা। মনোনয়ন যাকেই দেয়া হোক আমি নৌকার পক্ষে কাজ করছি কাজ করবো ইনশাআল্লাহ।

শুদ্ধস্বর ডটকমঃ আপনার রাজনৈতিক জীবনের গল্প শুনতে চাই। রাজনীতির শুরুটা কিভাবে হয়েছিল? এই দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কি কি দায়িত্ব পালন করেছেন দলের হয়ে?

এম সাইফুল্লাহ সাইফুলঃ  আমার রাজনীতি শুরুটা হয় আওয়ামীলীগের রাজনীতির মাধ্যমে। ১৯৮২সালে সেনপাড়া-বড়বাগ ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক হই। তারপর ছাত্রলীগের রাজনীতি শুর করি। এ পর্যন্ত যে যে দায়িত্ব পালন করি তা হলো-

দপ্তর সম্পাদক

ঢাকা মহানগর আওয়ামীলীগ উত্তর (২০১৭-বর্তমান)

সাবেক সহ সম্পাদক

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ উপ কমিটি।

সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক

বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগ (২০১৩-২০১২ইং)

সাবেক সহ সভাপতি

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জাতীয় নির্বাহী কমিটি( লিয়াকত-বাবু)

সাবেক সভাপতি

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ,ঢাকা মহানগর উত্তর (১৯৯৮-২০০২ইং)

সাবেক সদস্য

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ,জাতীয় নির্বাহী কমিটি (শামিম-পান্না)

সাবেক সহ সভাপতি

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকা মহানগর  উত্তর (অশ্রু-সাচ্চু কমিটি)

সাবেক সদস্য

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ,ঢাকা মহানগর(অবিভক্ত,মারুফ -মতি কমিটি)

 সাবেক গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক

সরকারী বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগ (মাছুম-মাজহার)

সাবেক সাধারণ সম্পাদক

আওয়ামীলীগ,সেনপাড়া বড়বাগ ইউনিট(১৯৮২)

received_239391940263432

শুদ্ধস্বর ডটকমঃ রাজনৈতিক জীবনের এই দীর্ঘ পথা চলা কেমন ছিল?

এম সাইফুল্লাহ সাইফুলঃ ১৯৮৬ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে পাড়ি দিয়েছি অনেক কঠিন পথ। অংশ নিয়েছি অসংখ্য রাজনৈতিক আন্দোলন-সংগ্রামে। ৯০এর স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছি সামনে থেকে। দেশ বাঁচাও,স্বৈরাচার হঠাও ,স্লোগান দিয়ে রাজপথে থেকেছি সেই সময়ে। ১৯৯১ সাল থেকে ৯৬ সাল পর্যন্ত অসহযোগ আন্দোলনে গ্রেফতার হয়েছি বহুবার। ২০০২ সাল থেকে ০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামাত বিরোধী আন্দোলেনে সম্পৃক্ততা ও নেতৃত্ব দানের কারণে রাজপথ থেকে অনেকবার গ্রেফতার ও আহত হয়েছি। নির্বাচন কমিশন,বঙ্গভবন,হাওয়া ভবন ও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় ঘেরাও আন্দোলনে প্রতিটি মিছিলে নেতত্ব প্রদান করেছি সেই সময়ে। ২৮’অক্টোবর আন্দোলন চলাকালে মিরপুর থেকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে পল্টন ময়দানে যাই এবং জোট সরকারের জারি করা ১৪৪ ধারা ভাঙ্গার চেষ্টাকালে পুলিশের লাঠিচার্জ ও রাবার বুলেটের আঘাতে আহত হয়ে দীর্ঘ দিন চিকিৎসাধীন থেকেছি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সেন্ট্রাল হাসপাতালে।

 ২০০৭ ও ২০০৮ সালে জরুরী অবস্থার সময় দেশরত্ন শেখ হাসিনা গ্রেফতার হওয়ার সাথে সাথে মিরপুর ১০ নং গোলচত্বরে মিছিল বের করেছিলাম। দেশরত্ন বন্দী থাকাকালীন অবস্থায় সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের নিয়ে সাব-জেলের সামনে প্রতিদিন অবস্থান করেছি। বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক থাকাকালে নেত্রীর মুক্তির দাবীতে কাজীপাড়ায় রোকেয়া স্মরণীতে নাহার কমিউনিটি সেন্টারে সেই বৈরী সময়ে সরকারের রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে এলাকার সকল আওয়ামী রাজনীতির নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রকাশ্যে বর্ধিত সভা করেছি। ওই সভায় প্রধান অতিথী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষিবীদ জনাব আঃ আব্দুল মান্নান এমপি। ১/১১ এর সময়কালে আওয়ামীলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় নেতা ও বর্তমান সরকারের শিল্পমন্ত্রী জননেতা আমির হোসেন আমু,ঢাকা মহানগর আওয়ালীগের সাবেক নেতা ও বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী জনাব কামরুল ইসলাম এমপি ও বর্তমানে আওয়ামীলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিনের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ সহ আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় নেত্রী মুক্তি আন্দোলন এর কমিটি গঠন ও অফিস উদ্বোধন করেছি। যার জন্য পরিবার ও আত্মীয় স্বজনকে অনেক হয়রানি ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল।

এছাড়াও বিরোধী দলে থাকাকালীন সময়ে নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়েছি বারংবার। তবুও সব বাধা ফেলে দল ও নেত্রীকে ভালবাসার ক্ষেত্রে ছিলাম আপোষহীন। সব বাধা পেরিয়ে সকল পরিস্থিতিতে গনতন্ত্রের মানসকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অবিচল ও অকুন্ঠ আনুগত্য পোষণ করে চলেছি এবং ভবিষ্যতেও তাই করব।

received_267852903856865.jpeg

শুদ্ধস্বর ডটকমঃ দল যদি আপনাকে মনোনয়ন দেয় এবং আপনি যদি এমপি নির্বাচিত হোন তাহলে ঢাকা ১৫ আসন নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কি?

এম সাইফুল্লাহ সাইফুলঃ নেত্রী আমাকে মনোনয়ন দিলে এতটুকু ভরসা আছে যে আমি নির্বাচিত হবই। কারণ আমি এই জনপদের সন্তান। এই জনপদেই আমার বেড়ে ওঠা। এই এলাকার প্রত্যেক অলিগলি,মানুষজন আমার খুবই পরিচিত। সবার সাথে আত্মার সম্পর্ক। আমি নির্বাচিত হলে প্রথমেই এলাকার শিক্ষাব্যবস্থার দিকে নজর দেব। জোর চেষ্টা থাকবে শিক্ষাবান্ধব  একটি এলাকা গড়ে তোলার। এই আসনের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ডিজিটালাইজ করা হবে। বেকারত্ব সমস্যার হ্রাস করার চেষ্টা থাকবে সর্বোচ্চ। এই এলাকায় উন্মুক্ত কোন খেলার মাঠ নেই।তরুণ প্রজন্মের স্বাভাবিক বেড়ে ওঠার জন্য উন্মুক্ত খেলার মাঠের ব্যবস্থা করব সর্বাগ্রে। আশেপাশে ভাল কোন কমিউনিটি সেন্টার নেই। প্রথমেই একটা কমিউনিটি সেন্টারের ব্যবস্থা করা হবে। এলাকার গরীব দূঃখী মানুষের জন্য প্রত্যেক মাসে এলাকা ভিত্তিক ফ্রি স্বাস্থ্যসেবার ক্যাম্পেইন এর ব্যবস্থা করব। বিশেষ করে এই এলাকায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের আধিক্য অনেকটাই বেশি। এদের নিরাপত্তা ও সুবিধার দিকে নজর থাকবে সবসময়। ডিজিটাল বাংলাদেশের অংশ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক প্লেসে ফ্রি ওয়াইফাই এর ব্যবস্থা করা হবে। তড়িৎ নাগরিক সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ২৪ ঘন্টার জন্য টোল ফ্রি হটলাইনের ব্যবস্থা করা হবে। এলাকায় কোন সম্মিলিত কবরস্থান নাই। একটা কবরস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। .গ্রীণ সিটি করার লক্ষ্যে সবুজ বনায়নের ব্যবস্থা করা হবে এলাকাজুড়ে। মাদক,সন্ত্রাস,ইভটিজিংমুক্ত এলাকা গড়ার জন্য বিভিন্ন এলাকায় ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা ও আইপি ক্যামের ব্যবস্থা করব ইনশাআল্লাহ।

শুদ্ধস্বর ডটকমঃ নির্বাচন উপলক্ষ্যেই তো চলছে জোর প্রচারণা। প্রচারণার অংশ হিসেবে আপনি কি করছেন?

এম সাইফুল্লাহ সাইফুলঃ নেত্রীর আদেশ মোতাবেক ঢাকা ১৫ আসনের প্রত্যেক ওয়ার্ড,এলাকায় উঠোন বৈঠক, মহাজোট সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে লিফলেট বিতরণ,জনসংযোগ চলছে। এই আসনের আওয়ামী রাজনীতির সর্বস্তরের নেতাকর্মী,বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে দিনরাত ছুটে বেড়াচ্ছি মানুষের দ্বারে দ্বারে নৌকার পক্ষে কথা বলতে। এছাড়াও ঢাকা মহানগর আওয়ামীলীগের দফতর সম্পাদক হিসেবে নগর ও কেন্দ্রীয় কর্মসূচীতেও অংশ নিচ্ছি সমানতালে।

শুদ্ধস্বর ডটকমঃ আমাদের পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দেয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপনাকে। আপনার আগামী সময়ের জন্য শুভকামনা রইলো।

এম সাইফুল্লাহ সাইফুলঃ আপনাদেরও ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।

সাক্ষাত্কারটি গ্রহণ করেছেন: জাকওয়ান হুসাইন 

 

 

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.