
সমগ্র ইউরোপ জুড়ে হেমন্ত কাল শুরু হয়ে গেছে। রাস্তা ঘাট,পার্ক কিংবা বন জঙ্গলের গাছের পাতা গুলো ঝরে পরা শুরু হয়েছে। যেদিকেই তাকাই কেবল সোনালী পাতার বাহার।গ্রীষ্মকালে যে মাঠ গুলো থাকতো সবুজের বাহারে রাঙিয়ে, এখন সেই সবুজ মাঠেই সোনালী রঙের ঝরা পাতা উরে এসে জুড়ে আছে সোনালী রঙের বাহারে।পায়ে হাঁটার রাস্তা গুলো সোনালী পাতায় ঢাকা মখমলে চাদরের মতো দেখতে। হাঁটার সময় এমন মচমচেঁ আওয়াজ হয় যেন নিজেই কোনো সুরেলা সুরের বাদক। লক্ষ করলে দেখা যায় প্রতিটি পাঁয়েই আলাদা ঝংকার। শিশুদের যেন অন্য এক আনন্দ, ঝরা পাতার ছুঁড়োছুঁড়ি বা পাতা গুলো এক জায়গায় জড়ো করে হেলেদুলে পরা বা সোনালী ঝরা পাতা দিয়ে গা ঢেকে রেখে অনাবিল আনন্দে লুটিয়ে পরা। হেমন্তেই ইউরোপ জুড়ে ঠান্ডা বাতাস, হিম শীতল বাতাসই শীতের আগমনীর বার্তা বলে দিচ্ছে ।
আর কদিন পরেই হেমন্ত বিদায় নেবে।সোনালী ঝরা পাতার চাদরের ঢাকা সব জায়গা গুলো সাদা ধুসর বরফকে জায়গা করে দিবে। সেই একই রাস্তা ঘাট, বন জঙ্গল,সোনালী মাঠ,উঁচু নীচু পাহাড় গুলো সাদা তুষারে সবই ঢেকে দিবে। যেদিকেই চোখ যাবে কেবলই বলাকার পেক্ষমের মত সাদা আর সাদার বাহারের অপেক্ষায়। হিম শীতল কনকনে শীতের ঠান্ডা বাতাস,শরীরের হাড়ে হাড়ে জানিয়ে দিবে তার উপস্থিতি। পশ্মী গরম কাপড়ে জড়ানো মানুষ গুলোর চলাফেরার গতি কতটুকুন বাড়িয়ে দিবে তা হিম শীতল কনকনে বাতাসই কানে কানে জানিয়ে দিবে। হেমন্তে যেখানে মানুষের ধীরালয়ে চলে , শীতে সেই চলাই দূরতর চলায় বাধ্য করবে।
ইউরোপের ভাগ্য প্রসূনের উপর এপ্রিলের রোদ্দুর আশ্বাস। এমনও এপ্রিলের দেখা মেলে রোদ্দুর জায়গায় সাদা তুষার অজড়ে ঝড়ে আর রোদ্দুর কে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে জমাট হয়ে জায়গা দখল করে রাখে। সাধারণত এপ্রিলে ধীরালয়ে তাপমাত্রা উর্ধগতির হয়ে গ্রীষ্মকালে বার্তা দেয় , তবে তা হিম শীতল কনকনে বাতাসের মর্জির উপরেই বেশী সময় নির্ভর করে। মে জুনে বৃষ্টির বেশী আনাগোনা , আর বৃষ্টিই যেন সেই একই মাঠ ঘাট,বন জঙ্গল ,পাহাড় কে সবুজের রঙে রাঙিয়ে তুলতে দু হাত বাড়িয়ে দেয়। মুলতো জুলাই/ আগস্ট ইউরোপের সর্বোপরি গ্রীষ্মকাল। হাতে গুনে বরজোড় ১০ থেকে ১২ দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫/৩৮ °c পাওয়া যায় বাকি দিনগুলো +২৫ থেকে ৩০ বা ৩২ °c তাপমাত্রা নির্ভর করে কতটুকুন ভালো গ্রীষ্মকাল ইউরোপের ভাগ্যে জুড়িয়ে আসে। তবে যেদিকেই চোখ যায় কেবলই সবুজ আর সবুজের সমারোহ। এ যেন এক সবুজের মঠ , চোখ জুড়ানো মনোরম দৃশ্য, সবুজের পরিবেশ মনকে ছুঁয়ে যাবে ।
বাংলায় আমাদের কবির চোখে সুন্দর মনোহর বাংলার দৃশ্য যে চমত্কার ভাষায় ফুটিয়ে তুলেছে ” সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা ” কখনো কখনো ভাবি আমাদের কবি ইউরোপের তিন রঙের সোনালী, সাদা আর সবুজের অপরুপা সমারোহ কে কি রুপে বর্ণনা দিতেন !হেমন্তের সোনালী, শীতের সাদা আর গ্রীষ্মের সবুজে সমারোহ।
বুলবুল তালুকদার
সহকারী সম্পাদক,শুদ্ধস্বর ডটকম