সিনহা’র বই প্রকাশের পেছনে কারা ইন্ধন দিয়েছে তা খুঁজে বের করুন-শেখ হাসিনা

শুদ্ধস্বর রিপোর্ট:
শুক্রবার নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন , সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা’র আত্মজীবনীমূলক বই প্রকাশের পেছনে কারা ইন্ধন দিয়েছে ? তা খুঁজে বের করতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে জানি, কিন্তু আমি আপনাদের বলবো না। বরং আমি আপনাদের কাছ থেকে এ ব্যাপারে জানতে চাই এবং আমি চাই এই বই প্রকাশের পেছনে কারা রয়েছে তা আপনারা খুঁজে বের করবেন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বিচারপতি সিনহা’র একটি আত্মজীবনী সমপ্রতি আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে।
ওই বইয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি তার পদত্যাগের বিভিন্ন কারণ তুলে ধরেছেন। ‘এ ব্রোকেন ড্রিম: রুল অব ল’, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি’ শীর্ষক এই বইয়ের কপিরাইট হচ্ছে ললিতমোহন- ধনাবাতি মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের নামে। যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে এই বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, এই বইয়ের পাণ্ডুলিপি কতবার বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখান থেকে আনা হয় তা সাংবাদিকদের খুঁজে বের করতে হবে। এই বই প্রকাশনায় কারা অর্থ দিয়েছে এবং আপনাদের মতো কোনো সংবাদপত্রের সাংবাদিক এর সঙ্গে জড়িত কি-না এবং কি পরিমাণ অর্থ দিয়েছে তা অনুগ্রহ করে উন্মোচন করুন। শেখ হাসিনা বলেন, কোনো বড় আইনজীবী এই বইয়ের পাণ্ডুলিপি সংশোধন করে দিয়েছেন কিনা অথবা কোনো সংবাদপত্র অথবা এর মালিক এর পৃষ্ঠপোষক কিনা তা আপনারা খুঁজে বের করুন। যুক্তরাষ্ট্রে সিনহা’র ভাইয়ের নামে একটি বাড়ি ক্রয় সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে বাড়ি কেনা কঠিন কিছু নয়। তিনি বলেন, অনেক দামের কারণে বাংলাদেশে কেনা কঠিন।
তবে নির্বাচনকালীন সরকার সম্পর্কে এখানে কোনো সংজ্ঞা নেই। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাপী সাইবার অপরাধ এখন একটি আলোচ্য বিষয়। সকল দেশ এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে এই আইন প্রণয়ন করেছি, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নয়। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের পর সাইবার অপরাধ এখন একটি বৈশ্বিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাংবাদিকদের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা সবসময় আইনের শুধু একদিক দেখেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদেও সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সবাই এ ব্যাপারে শঙ্কিত। কারণ বিভিন্ন সামাজিক অপরাধ, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদী কার্যক্রমকে সাইবারের মাধ্যমে উস্কে দেয়া হয়।
শিশু থেকে তরুণ পর্যন্ত সবাই যখন ভুল পথে চলে যাচ্ছে অথবা মানসিক ভারসাম্যতা হারিয়ে ফেলছে, তখন বিভিন্ন সামাজিক ও ডিজিটাল মাধ্যম নিয়ন্ত্রণ অপরিহার্য কি-না প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, যদি কোনো সাংবাদিক সুষ্ঠু সাংবাদিকতার চর্চা করেন তাহলে তিনি কেন শঙ্কিত হবেন? পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এ সময় মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ-বিন মোমেন সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য রাখেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন।