OLYMPUS DIGITAL CAMERA

লেখার শুরুতেই বলি , শিশুদের ঘরে ফেরার কথা বলে গতকালই একটি কবিতা লিখেছিলাম পত্রিকায় । কেননা কোমলমতিদের সময়ের এই সামাজিক আন্দোলনে আকাশে এখন নানান জাতের শকুনদের দেখা যাচ্ছে। এই শকুনদের চোখ এখন কেবলি নিষ্পাপ শিশুদের  দিকে । এই বিভ্রান্ত শকুনেরা যে আমাদের কোমলমতিদের ছিড়ে ছিড়ে খাবে , সেই আশংকা থেকেই ( বলতে পারেন ভয় থেকে ) কবিতায় বলেছি , তোমরা এই জাতিকে যা দিয়েছো বা যা দেখিয়েছ তা যদি এই জাতি এখনও  অনুধাবন করতে না পারে , তাহলে আগামী শত বছরেও পারবে না ।  সুতরাং ঘরে ফেরো , দেখি কি শিখলো এই জাতি তোমাদের কাছ থেকে । জানি ভরসা রাখার নয়, এটা অতি আশা । তবুও তোমাদের কথা ভেবেই এই অনুরোধ মন থেকে , ভালোবাসা থেকে ।

বলা ভালো ,এটা কি সত্যি কোনো আন্দোলন ছিলো ?
নাকি সময়ের চপেটাঘাতে শিশুদের ক্ষোভগুলো কেবল বিস্ফোরিত হয়েছে ? সেই ক্ষোভ আর বিষ্ফোরন এখন অনেক স্বার্থনেস্বী মহলের আকর্ষণীয় বিষয় !!! শিশুদের   ঘাড়ে বন্দুক রেখে গুলি চালানোর চেষ্টা  ! কি আশ্চর্য নিজেদের হেডম নাই কোমলমতিদের ঘাড়ে সাওয়ার হওয়ার বাসনা  !  ঘৃণা ছাড়া আর কি বা প্রদর্শন করা যায়, সেই স্বার্থনেস্বী মহলের প্রতি ?  শধু বলবো হে কোমলমতিরা তোমরা নিজেরা অনেক অনেক সচেতন বলেই আমার মনে হয়, জাতিও তাই মনে করে বলে ধারণা করি ।  তোমরা তোমাদের মত নিজেদের করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করো , তোমরাই জাতির শ্রেষ্ঠ  বিবেক।

বলছিলাম শিশুদের কাঁধ কত চওড়া  ?
এই কোমলমতিরা সমাজের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে , চাইলেই নিয়মতান্ত্রিক এবং সুষ্ঠু  ভাবে রাজপথে গাড়ি চলতে পারে । এমনকি আমাদের এত ভিরের রাস্তায়ও জরুরি চলাচলের জন্য রাস্তার এক অংশ ফাঁকা রাখা যায় । এই শিশুরা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, আমাদের পরিচালনাকারী হর্তাকর্তারা কতটা আইন ভঙকারী ! তারা প্রমাণ করে দিয়েছে  এমন কোনো বিভাগ নাই , যে বিভাগ আইন অমান্য করে না ! এই আইন অমান্যকারীরাই আমাদের সমাজের এলিট বিভাগ । এই এলিটরাই আবার আমাদের পরিচালনাকারী ! একবার ভাবুন এই কাজটি দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আজ অব্দি এতটা জোরালোভাবে কেও সামনে আনতে পারেনি ! যখন এই সব আইন অমান্যকারীদের হাতে আমাদের দায়িত্ব, সেখানেতো অরাজকতা থাকবেই । কেননা , এরাই অরাজকতার মূলে । এই বিষয়টি যখন ছোট্ট শিশুরা সমাজের সমানে একটি সামাজিক আন্দোলনের মধ্যে তুলে ধরলো , এলিটদের আঁতে ঘা লাগলো , ঠিক তখনই এই এলিটরা সহ ক্ষমতাসীনরা আস্ফালন শরু করলো !  নানান প্রশ্নবানে এবং নানান নৈতিকতার বাহানা দেখিয়ে, শিশুদের কে বেহাল করার প্রজেক্ট হাতে নিলো । এই প্রজেক্টের এলিটরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে টিভির পর্দায় সর্বত্র । টিভির পর্দায় তো বড় বড় দালাল প্রকৃতির অধ্যাপক থেকে শুরু করে কতক এলিটদের দেখলাম , বঙ্গবন্ধুর মতন গালে হাত দিয়ে, মুখে জ্ঞাণগাম্ভীর্য ভাব নিয়ে, শিশুদের প্রতি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছেন ।  যেহেতু শিশুরা রাষ্ট্রের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে ,  এখন নাকি তাদের দায়িত্বের মধ্যে পরে , ঘরের কর্তা ব্যক্তির আয় -উপার্জন নিয়মতান্ত্রিক ভাবে হচ্ছে কিনা ? বা শিশুদের কর্তা ব্যক্তিরা সরকার কে সঠিকভাবে ট্যাক্স প্রদান করেন কিনা ? ইত্যাদি ইত্যাদি নানান প্রশ্ন বা শিশুদের কে বাঁটে ফেলার নানান ফন্দিফিকির !!! কি আশ্চর্য !  শিশুরা সমাজের চপেটাঘাতে , কোনো প্লান- প্রগরাম ছাড়া, যাদের কে পিছনে থেকে কেউ অরগানাইজ করে নাই , হঠাত্ই একটি কষ্টের  স্ফুলিঙ্গ থেকে রাস্তায় এবং তারপরে যত কাহিনী । সেই কাহিনীতেই সমাজের চোখের কালো পর্দার উওলন । এখন এলিটদের আঁতে ঘা সয্য না হওয়ায়, শিশুদের কে নৈতিকতা শেখানো!

প্রশ্ন হলো , শিশুরা ঘরের দায়িত্ব নিতে যাবে কেন ?

এই শিশুদের কর্তা ব্যক্তিরা যে যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন , তাদের কি দায়িত্ব নাই ?  সেই সকল প্রতিষ্ঠানের কি নিয়ম-কানুন নাই ? সেই নিয়ম-কানুন সঠিকভাবে পালন হলেই তো কিচ্ছা খতম । এই শিশুদের কর্তা ব্যক্তিরা নিয়মের বাইরে কিছুই করতে পারবে না । সঠিকভাবে আয়-উপার্জন হবে এবং সরকারকেও  সঠিকভাবে ট্যাক্স প্রদান করবে । তাই বলছিলাম , নিজেদের কলঙ্ক ঢাকতে শিশুদের কাঁধে ভর করেন কেন ? এই দায়িত্ব শিশুদের না দিয়ে এবং শিশুদের নৈতিকতা শেখানোর আগে , নিজেরা এই দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিন । আগে নিজেকে আয়নার সামনে দাঁড় করান , দেখেন কি প্রতিচ্ছবি দেখতে পান ?

শিশুদের কাঁধ এত চওড়া না যে , নিজেদের লজ্জা ঢাকতে , উল্টাপাল্টা কথা বলে , শিশুদের বিভ্রান্ত করে , সব দায়িত্ব তাদের ঘাড়ে দিতে পারেন এবং তাদের এই মহত কাজ কে ছোটো করে দেখাবেন !!!  তবে এখানে একটি কথা অগ্রিম বলে রাখি,  শিশুরা যদি বাধ্য হয় নিজেদের ঘরের দায়িত্ব নিতে , সেদিন এই সমাজের পরিচালনাকারী কলঙ্কিত কর্তা ব্যক্তিরাও গর্তে লুকাতে বাধ্য হবে ।

বুলবুল তালুকদার 

সহকারী সম্পাদক, শুদ্ধস্বর ডটকম

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading