বাবুল ও তার বন্ধুরা আজ আড্ডায় বসে এক বিষয় নিয়ে হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছে।মানুষের টাকা রোজগার করতে যে কেনো কাজ করা লাগে,এই বিষয়টাই তাদের হাসির মূল বিষয়।বাবুল ও তার বন্ধুরা গত ৫ বছরে কোনো কাজ ছাড়াই অনেক টাকা ইনকাম করে দেখিয়ে দিয়েছে সবাইকে।
টাকা রোজগারের জন্য তাদের দুই সিজনই যে যথেষ্ট।প্রথমটি হল ওয়াজ-মাহফিলের সিজন।মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে তারা কাজের লাগানোর কাজটা ভালোভাবেই আয়ত্ত করতে পেরেছে।বেশীরভাগ হুজুররাই তাদের এই সুযোগ করে দিয়েছে।ধরেন,তারা অনেক অনেক বড় হুজুরকে চেনে,যারা এক ঘন্টা ওয়াজের জন্য সর্বনিম্ন এক লাখ টাকা নেন।তারপরেও তাকে গাড়ি ভাড়া,খাওয়ার পয়সা আলাদা দিতে হয়।ইসলামের কোনো জায়গায় ধর্মীয় কোনো কাজ করে এইভাবে চার্জ করে টাকা নেয়ার নিয়ম নেই,হাদিয়া সামান্য যা খুশী হয়ে দেয়া হয় তাই নেয়া জায়েজ আছে।এইসব হুজুররা তাদের ওয়াজে সব মুসলিমদের এক হওয়ার কথা না বলে শুধুমাত্র কাফেরদের দোষ দিয়ে যান,তাদের আরেকটা গুণ হল তারা গানের সুরকে নকল করে তাতে গজল ঢুকিয়ে দেন।আর এইসবের সুযোগ নিয়ে বাবুলরা মানুষের কাছে এক বা দুই লাখ টাকার জায়গায় প্রতিবার সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে দশ বারো লাখ টাকা কামায়।গানের সুর নকল করা ভন্ড হুজুরদের সাথে সাথে তাদেরও ইনকামের পথ খোলে যায়।
আর একটা সিজন হল কনসার্টের সিজন।এই সিজনেও বাবুলরা দুই হাতে টাকা কামায়।অনেক শিল্পী তাদের স্টেইজ পার্ফোরমেন্স করেনই না ৮-১০ লাখের নিচে।এই সুযোগেই বাবুলরা কনসার্টের আয়োজন করে অতি দামের টিকিটের ব্যবসা করে।নেশা করে শিল্পীরা তাল বেতাল হারিয়ে গান গাইতে থাকেন,মানুষ দামী টিকিট কেটে বসে,আর বাবুল ও তার বন্ধুরা পর্দার আড়ালে বসে আনন্দ পায়।এই আনন্দ এমনি এমনি আনন্দ না,এই আনন্দ টাকার আনন্দ।টাকার আনন্দ থেকে যে বড় কোনো আনন্দ এই পৃথিবীতে নেই,তা বাবুলরা গত কয় বছরে টাকা হাতে আসার পর বোঝে গেছে।তাদের সাথে আরও দুই শ্রেণীর কিছু মানুষও তা বোঝে গেছে।তারা হল ঐ টাকা দাবী করা ওয়াজী এবং গায়ক।
শুধুর টাকার আনন্দ আমাদের মত জনসাধারণ কখনো বোঝতে পারলো না।আহারে টাকা,টাকা রে।
লেখকঃ মোঃ শাহিন আহমেদ রিয়াদ