বিজয় অর্জনের পর স্বাধীন বাংলাদেশে গনতান্ত্রিক আচরণের বিকাশ প্রথম বারের মতো ধাক্কা খেয়েছিলো ১৯৭৩’সালে ডাকসূ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে।সদ্যপ্রয়াত আ ফ ম মাহবুবুল হকের প্যানেল (জাসদ সমর্থিত ছাত্রলীগ)বিপুল ভোটে জয়ী হওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয়।অত:পর লেনিন-গামা পরিষদের(মুজিববাদী ছাত্রলীগ ও ছাত্রইউনিয়নের সম্মিলিত)নিশ্চিত ভরাডুবি জেনে তদানিন্তন সরকারের প্রশ্রয়ে ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে ইতিহাসে বাংলাদেশের গনতন্ত্রের বিকাশের দ্বার রূদ্ধ করার জন্য যে পেরেক টুকে দেয়া হয়েছিলো-সে পেরেক বা জট এখনও কেউ খুলতেই পারেনি।সবকিছু বাদ দিলেও বিচারপতি সিনহা’র সদ্য পদত্যাগ অনেক না বলা কথা বলে বইকি!!
১৯৭৩’সালে ডাকসূ নির্বাচনে আ ফ ম মাহবুবুল হকের বিজয়ের কথা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ও সাবেক ডাকসূ ভি পি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের স্বীকারোক্তির বিষয়টি বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজামের ফেসবুক ষ্ট্যাটাসে নতুন করে এসেছে।
বিভিন্ন মাধ্যমে এখনও জীবিতদের অনেককে বলতে দেখা যায় যে,সেই সময়ে মোশতাক গংসহ এবং আওয়ামী লীগের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ লোকজন ডাকসূ’তে কেন কিভাবে ব্যালট বাক্স ছিনতাই করা হলো জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধুকে বলা হয়েছিলো-“ডাকসূ’র সরাসরি নির্বাচনে আ স ম আবদুর রব ও আবদুল কুদ্দুস মাখনের বিজয় পাকিস্তান সরকারের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছিলো।আ ফ ম মাহবুবুল হক’রা জিতলে আপনার সরকারেরও ভিত নড়তে পারে।” এসব কিছু আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ ছিলো কিনা বা সত্যমিথ্যা যাই থাকুকনা কেনো তা আগামী জমানার গবেষকদের হাতে নিশ্চয় উঠে আসবে।তবে সেদিন ব্যালট বাক্স ছিনতাই না হলে বাংলাদেশে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে গণতান্ত্রিক আচরণের বিকাশের দ্বার উন্মোচিত হতো।ইতিহাসে ১৯৭৫’সালের পটপরিবর্তন বা বিশ্বাসঘাতকতা হয়তোবা অনেক যোজন যোজন দূরের ব্যাপার ছিলো।
আ ফ ম মাহবুবুল হকের মৃত্যুতে বাংলাদেশের সমসাময়িক বিশিষ্ট রাজনীতিকদের অনেকেই মূখে না বললেও অনুশোচনায় ভুগবে।বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ নূহ আলম লেনিন বা ইসমত কাদির গামার কথা বাদই দিলাম।
শিকদার গিয়াসউদ্দিন,লাস ভেগাস,যুক্তরাষ্ট্র।
আজন্ম বিপ্লবী বীর মুক্তিযুদ্ধা আ ফ ম মাহবুবুল হক স্মরণে সংক্ষিপ্ত কিন্তু তথ্য সমৃদ্ধ এই লিখাটি ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ।লেখককে বিপ্লবী অভিনন্দন ।