‘পহেলে দর্শনধারী, ফির গুণবিচারি।’ এই প্রবাদের ফাঁদে পড়েই কত গেঁয়ো যোগীই না ভিখ পাচ্ছে না। এঁদেরই একজন রাণাঘাটের রাণু। স্টেশনে নিজের মনেই গান গাইতেন তিনি। তাঁর গলায় যেন স্বয়ং দেবী সরস্বতী বিরাজ করেন। কিন্তু ধুলোমাখা আধবুড়ি এই মহিলাকে পাত্তা দিতেন না কেউ। কিন্তু এখন তিনি সোশ্যাল মিডিয়ার ‘সুরসাম্রাজ্ঞী’। তাঁর গানের জাদুতে মাতোয়ারা ওয়েবদুনিয়া। এরপর বাইরে থেকে ডাক আসছে অনেক।সোশ্যাল মিডিয়ার ‘সুরসাম্রাজ্ঞী’কে এখন কি আর এই রূপে মানায়? তাই সোশ্যাল মিডিয়ার ‘সুরসাম্রাজ্ঞী’কে নবরূপে দর্শকের সামনে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিল একটি কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী।
‘ক্লাব সাগ্নিক’ রাণুর এই মেকওভারের দায়িত্ব নেয়। সম্প্রতি তারা ভবঘুরে রাণুর মেকওভার করেছে। পার্লারে নিয়ে গিয়ে আপাদমস্তক বদলে দিয়েছে ভবঘুরে রাণুর ভোল। এখন তাঁকে আর রাণাঘাট স্টেশনের সেই পরিচিত ভবঘুরে রাণু লাগছে না। হাতে নেলপলিশ, গায়ে গোলাপি-সাদা শাড়ি আর স্ট্রেট চুলের রাণুকে এখন কোনও চেনাই দায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে রাণুর মেকওভারের কিছু মুহূর্তের ছবি। সেগুলিতে এখন লাইক আর শেয়ারের ঝড় উঠেছে। কয়েকদিনের মধ্যেই যে সোশ্যাল মিডিয়ার ‘সুরসাম্রাজ্ঞী’কে মানুষ অন্তর থেকে ভালবেসে ফেলেছে, ছবির কমেন্ট আর লাইকের বহর যেন তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। কেউ কেউ তো আবার প্রিয় ‘রাণুদি’কে এও পরামর্শ দিচ্ছেন, কোথাও অনুষ্ঠান করতে গেলে তিনি যেন এভাবেই যান। আর রাণু? তিনি কী বলছেন? অনুরাগীদের এমন কর্মকাণ্ডে তিনি অভিভূত।
তবে রাণু আদৌও বাইরে গিয়ে কোনও অনুষ্ঠান করতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন। কারণ রাণাঘাট স্টেশনের এই মহিলার কোনও পরিচয়পত্র নেই। পরিচয়পত্র না থাকায় বিমান বা দূরপাল্লার ট্রেনে টিকিট কাটা মুশকিল হয়ে পড়েছে। এছাড়াও, কোনও সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে গেলে কিংবা তাদের সঙ্গে কাজ করতে হলে পরিচয়পত্র থাকা আবশ্যক। আর সেখানেই বিপত্তি। তবে বিডিও এবং এসডিপিওর হস্তক্ষেপে রানুর এই সমস্যা কেটে যাবে বলেই মনে করেন রানাঘাটবাসীরা।
সূত্র। সংবাদ প্রতিদিন