মিজানুর  রহমান খান আর নেই। তাঁর অকাল প্রয়াণে আমি গভীর শোক জানাচ্ছি। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। তাঁর শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই আমি। করোনা এই দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ মানুষকে আমাদের কাছ থেকে নিয়ে গেছে, যার সর্বশেষ সংযোজন মিজানুর রহমান খান। করোনা নিয়ে শুরু থেকে সরকারের যাচ্ছেতাই অবহেলা আর অব্যবস্থাপনার মাশুল এই জাতি সব রকমভাবে দিচ্ছে।

 

মিজান ছিলেন সাংবাদিক এবং প্রথম আলোর যুগ্ম-সম্পদক। কিন্তু তাঁর সেসব পরিচয়কে অনেক বেশি ছাপিয়ে গিয়েছিল কলামিস্ট এবং টকশো বক্তা পরিচয়টি। সমসাময়িক বিষয় নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কলামিস্ট কলাম লিখেন। সেসব বিষয় নিয়ে লিখেছেন মিজান‌ও। কিন্তু সমসাময়িক বিষয়ের বাইরে সংবিধান আর আইন তিনি যা লিখেছেন সেটা আইনজীবি নয় এমন মানুষকে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের এই অত্যাবশ্যক বিষয়টি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ধারণা দিয়েছে। আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ধারণার সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত ‘সেপারেশন অব পাওয়ার’ ধারণাটি। রাষ্ট্রের মৌলিক বিভাগগুলো, বিশেষ করে আইন বিভাগ এবং বিচার বিভাগ কীভাবে শাসন বিভাগ থেকে তাদের সত্ত্বাকে আলাদা রেখে গণমানুষের পক্ষে কাজ করে যেতে পারে সেটা নিয়ে তিনি ক্রমাগত লিখে গেছেন। অত্যন্ত কম বয়সে (৫৩ বছর) মারা গেছেন মিজান। তাঁর মত মানুষরা সময়ের সাথে আরো অনেক পরিণত হয়ে ওঠেন। আরও পরিণত একজন মিজানের কাজ থেকে আমরা বঞ্চিত হয়েছি, এটা ভীষণ হতাশার। কিন্তু এটাও আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই সময়ের মধ্যে তিনি যা করেছেন সেটাও ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ এবং সেটা অনাগত দিনেও তা আমাদের পথ দেখাবে।

মাহমুদুর রহমান মান্না , আহ্বায়ক , নাগরিক ঐক্য ।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from শুদ্ধস্বর ডটকম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading