লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের আমির হোসেন ডিপজলের মালিকানাধীন মেসার্স মদিনা ব্রিক্সের ঝুঁকিপূর্ণ দেয়াল ধসে মো: বেলাল হোসেন (৩০) ও ফারুক হোসে (১৮) নামের আপন দুই ভাইসহ রাকিব হোসেন (২০) নামের আরো এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
নিহত দুই ভাই জেলার কমলনগর উপজেলার চরজগবন্ধু গ্রামের আলতাফ মাঝির ছেলে। অপর নিহত রাকিবের পুরো পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় আরমান হোসেন ও হেলাল হোসেনসহ আহত হয়েছেন আরো ১০ ইটভাটা শ্রমিক।
আহতদের রামগঞ্জ উপজেলা হাসপাতাল ও লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রোববার বিকেল ৫টার দিকে রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের দেহলা মদিনা ব্রিক ফিল্ডের চুল্লির দেয়াল ধসে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে রামগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ও রামগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
শ্রমিক হেলাল হোসেন জানান, প্রতিদিনের মতো তিনিসহ ফিল্ডের ১৫ থেকে ২০জন শ্রমিক চুল্লিতে কাঁচা ইট বসাচ্ছিলেন। হঠাৎ করেই চুল্লির উত্তর পাশের দেয়ালটি ধসে শ্রমিকদের ওপর পড়ে। এ সময় শ্রমিকরা দেয়ালের নিচে চাপা পড়া কয়েকজন শ্রমিককে বের করতে পারলেও দুই ভাই বেলাল ও ফারুক এবং রাকিবকে বের করতে পারেননি। পরে দুই ভাই বেলাল ও ফারুককে মৃত উদ্ধার করা হলেও রাকিবকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
হাবিবুর মাঝি নামের এক শ্রমিক জানান, গত বছর একবার এ ধরনের দুর্ঘটনায় কয়েক শ্রমিক আহত হলে আমরা মালিককে জানালেও তিনি চুল্লির দেয়াল সংস্কার করেননি। উপরুন্ত আমাদের মালিক আমির হোসেন ডিপজল বলেন, এখনো তো কেউ মারা যায়নি। মারা গেলে না হয় একলাখ টাকা করে দিয়ে দিবো। এদিকে ঘটনার পরপরই মালিক আমির হোসেন ডিপজল ও ব্রিকফিল্ডের ম্যানেজার পালিয়ে যাওয়ায় তাদের বক্তব্য নেয়া যায়নি।
রামগঞ্জ ফায়ার স্টেশনের কর্মকর্তা আবদুর রশিদ জানান, আমরা ঘটনাস্থলে এসে প্রাথমিক ধারণা করছি ধসে যাওয়া দেয়ালটি ছিলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। অনেক পুরাতন হওয়ায় দেয়ালটি কর্মরত শ্রমিকদের ওপর ধসে পড়ে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। আহতদের তিনটি অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স ও লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, আমরা তথ্য নিচ্ছি। এ ঘটনায় মালিকপক্ষের গাফিলতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।